1. admin2@kalernatunsangbad.com : admin : Admin
  2. admin@kalernatunsangbad.com : Khairul Islam :
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২১ অপরাহ্ন

ভৈরবে কেমিক্যাল সংকটে ব্যাহত পাদুকা উৎপাদন

  • প্রকাশ কাল মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪
  • ১০৫ বার পড়েছে


জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধি ॥
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কেমিক্যাল সংকটে বন্ধ হয়ে আছে বেশ কয়েকটি কারখানা। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে যেখানে দিন রাত পাদুকা উৎপাদন করতো পাদুকা শ্রমিকরা সেখানে অলস সময় কাটাচ্ছে ভৈরবের পিও ফুটওয়্যার কারখানার কর্মচারীরা। এদিকে যাদের মজুদকৃত কিছু কেমিক্যাল ও কাচামাল ছিলো তারাই রমজান উপলক্ষে কিছুটা পাদুকা উৎপাদন করতে পারছে। এদিকে দেশের বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে বেচা কেনা আগের মতো নেই বলে দাবী পাদুকা ব্যবসায়ীদের। কেমিক্যালসহ পাদুকা তৈরির বিভিন্ন উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে গতবারের তুলনায় পাদুকা তৈরি ও আমদানি-রপ্তানী কমে অর্ধেকে নেমে গেছে।

ভৈরবে ৪২টির মতো পিও ফুটওয়্যার কারখানাসহ ছোট বড় ৩ থেকে ৪ হাজার কারখানা রয়েছে। ভৈরব শহর জুড়ে বিভিন্ন কারখানায় নারী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। পাশাপাশি পুরুষ শ্রমিক রয়েছে প্রায় ১ লাখের মতো। এ পাদুকাকে ঘিরে প্রত্যক্ষ ও পুরোক্ষভাবে ৩ থেকে ৪ লাখ শ্রমিক এ শিল্পের সাথে জড়িয়ে আছে।

সরেজমিনে আজ রবিবার (১৭ মার্চ) গিয়ে দেখা যায়, হাতে তৈরি পাদুকা শ্রমিকরা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে জিনিস পত্রের দাম বেশী থাকায় যেখানে দিনে ২০ থেকে ২৪ জোড়া পাদুকা তৈরি করতে পারতো সেখানে ১০/১২ জোড়া পাদুকা তৈরি হচ্ছে। এদিকে কেমিক্যাল সঙ্কটের কারণে বন্ধ রয়েছে আরাম ফুটওয়্যারসহ ছোট বড় ১০ থেকে ১২টি কারখানা। কারখানাগুলিতে শুধু হাতে তৈরি পাদুকা উৎপাদন চলছে। যাদের মজুদকৃত কেমিক্যাল ও কাঁচামাল আছে তারাই মেশিনের মাধ্যমে পাদুকা উৎপাদন করতে পারছে। এভাবে চলতে থাকলে এ মৌশুমে ব্যবসা তো হবে না বরং লোকশানগুণতে হবে পাদুকা কারখানা মালিকদের।

এ বিষয়ে শ্রমিকরা জানান, কেমিক্যাল সঙ্কটের কারণে আমরা বেকার বসে আছি। রমজানের সিজনে বেশী পাদুকা উৎপাদন করে আমরা মালিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিতে পারতাম। কিন্তু এবার আমরা হতাশায় রয়েছি। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায় ধ্বস নামবে।

আরাম পিও ফুটওয়্যার মালিক আব্দুল আলিম বলেন, কেমিক্যাল সংকটে গত ১ সপ্তাহ বেশী সময় ধরে পাদুকা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা বলছেন দু’এক দিনের মধ্যে কেমিক্যাল পেয়ে যাবো। কিন্তু কখন পাবো নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না। এদিকে অলস সময় কাটাচ্ছে আমার মেশিন শ্রমিকরা। যেখানে রমজানের ১০ এর ভিতরে আমরা ব্যবসায়ীদের চাহিদা মিটিয়ে পাদুকার মজুদ রাখতে পেরেছি সেখানে রোজার ৬ চলে গেলেও আমাদের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা গুটিয়ে চলে যেতে হবে।

ঈগল ফুটওয়্যার মালিক সাফিক মিয়া বলেন, কোন এক কারণে কেমিক্যাল আমদানী বন্ধ রয়েছে। কেমিক্যালের অভাবে শ্রমিকরা ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। অপরদিকে চায়না থেকে আমদানিকৃত পণ্যের সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। এদিকে প্রতিটি মালের দাম বেড়েছে দ্বিগুন। পাইকারদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঠিকমত শ্রমিকদের বেতন ভাতা দিতে না পারায় শ্রমিকদের মধ্যে অনীহা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ী নূরুল হক, নবী হোসেন, মঞ্জুরুল করিম জানান, ভৈরবের উৎপাদিত পাদুকা দিয়ে প্রতি বছর পাইকারদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হতো। এবছর পাদুকার মাল ম্যাটিয়েলস্ এর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পাদুকার চাহিদা কমেছে। আগে পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা যে পরিমান পাদুকা নিতো এ বছর তা অর্ধেক হয়ে গেছে।

পাইকার এম এ মামুন, জাকির হোসেন, রফিক মিয়া জানান, আগের তুলনায় পাদুকার দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতি জোড়াতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে ১ লক্ষ টাকা এনে যে পরিমান মাল নিতে পারতাম এবার তা অর্ধেক পারছি।

এ বিষয়ে ভৈরব পাদুকা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আল আমিন মিয়া বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর ব্যবসা অনেকটা কমে গেছে। করোনার পর রাশিয়া, ইউক্রেন যুদ্ধে দেশের সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পাদুকা শিল্পেরও সকল কেমিক্যালসহ কাঁচামালেরও দাম বেড়েছে। রমজানের শুরুতে কেমিক্যাল সঙ্কটে পাদুকাও ঠিকমতো উৎপাদন হচ্ছে না। বস্ত্র শিল্পের পাশাপাশি পাদুকা শিল্পেও সরকারের আন্তরিকতা প্রয়োজন। ভৈরবে একটি কমন ফেসিলিটি সেন্টার প্রয়োজন। তাহলে শ্রমিকরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অত্যাধুনিক পাদুকা তৈরি করতে পারবেন ও তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদসমূহ


প্রযুক্তি সহায়তায় BTMAXHOST