নিজস্ব প্রতিবেদক:
একজন মানুষ, যার চিন্তা ও কর্ম দেশের রাজনীতি, সমাজ ও মানবতার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত — তিনি ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার স্বপন। চিকিৎসক, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক চিন্তাবিদ এবং মানবসেবক — এক জীবনে তিনি ধারণ করেছেন একাধিক ভূমিকা।
ঝালকাঠির মাটিতে জন্ম নেওয়া জিয়াউদ্দিন হায়দার স্বপন ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অধ্যবসায়ী ও স্বপ্নবান। শিক্ষা জীবনে তিনি নিজেকে গড়ে তুলেছেন সততা, অধ্যবসায় ও সেবার মানসিকতা নিয়ে। চিকিৎসা শাস্ত্র বেছে নিয়েছিলেন মানুষের কষ্ট দূর করার লক্ষ্যেই।
ড. স্বপনের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় মানুষের অধিকার রক্ষার আদর্শ থেকে। চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি রাজনীতিকে দেখেছেন জনগণের কল্যাণের মাধ্যম হিসেবে।
আজ তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রজ্ঞা, সততা ও আদর্শ দিয়ে।
তিনি একজন চিন্তাবিদ, যিনি সমসাময়িক রাজনীতি, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে নিয়মিত মতামত দেন। তার চিন্তায় আছে বাস্তবতার গভীর বিশ্লেষণ, আর আছে মানবিকতার ছোঁয়া।
★ পরিচিতি ও পারিবারিক পটভূমি-
তিনি ঝালকাঠির নৈকাঠি (ঝালকাঠি সদর উপজেলা) গ্রামের ছেলে।
তাঁর পিতা মরহুম হরমুজ আলী ছিলেন একজন সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট সচিব।
তার তিন ভাই আছেন — অধ্যাপক কামাল উদ্দিন হায়দার, অধ্যাপক ডা. খালিদ মাহমুদ শাকিল ও ডা. এস.এম আনোয়ার পারভেজ। তারাও ছাত্র রাজনীতি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে সক্রিয় ছিলেন।
★ শিক্ষা-
তিনি MBBS (চিকিৎসাবিদ্যা) ডিগ্রি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় থেকে অর্জন করেছেন। মাস্টার্স করেছেন খাদ্য ও পুষ্টি পরিকল্পনায় ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে PhD অর্জন করেছেন পুষ্টি ও মহামারীবিদ্যা উমিয়া (Umeå) বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডেন থেকে।
★ পেশাগত ও কর্মজীবন-
ড. স্বপনের পেশাগত পথ বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন খাতে আফ্রিকা, এশিয়া দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকার ৬২ টিরও বেশি দেশে কাজ করেছেন।
প্রধান বিষয়গুলো:
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য, পুষ্টি খাতের ক্ষেত্রে ৩৫ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকে (World Bank) “সিনিয়র স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ” হিসেবে কাজ করেছেন এবং ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবসর নিয়েছেন।
তাঁর কাজ এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার ৬২ টিরও বেশি দেশে স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও টেকসই উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্পে ছড়িয়ে ছিলো।
অবসর গ্রহণের পর তিনি ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডজাঙ্কট (Adjunct) অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
★ রাজনৈতিক ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড
ড. স্বপন শুধু একটি বিশেষজ্ঞ হিসেবেই নয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে কিছুটা সক্রিয়তার দিকেও নিবেদিত:
ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ৮০-এর দশকে তিনি ছিলেন বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এবং শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি।
২০২৫ সালের ১০ মার্চ, তাকে বিএনপি চেয়ারপারসনের (বেগম খালেদা জিয়ার) উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
তিনি দলের কাজ, কৌশল ও পরিকল্পনায় অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা প্রয়োগ করবেন বলে অবস্থান ঘোষণা করেছেন।
২০২৫ সালের (সেপ্টেম্বর) এক সাক্ষাতে তিনি বলেছিলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে ১৮ মাসের মধ্যে এক কোটি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।
এছাড়া, তিনি প্রান্তিক পর্যায়ে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও “ন্যাশনাল হেলথ কার্ড” ভিত্তিক বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হবে বলে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
ডা. জিয়াউদ্দিন হায়দার স্বপন — এক আলোকবর্তিকা, যিনি প্রমাণ করেছেন যে মানবতা এখনও বেঁচে আছে একজন চিকিৎসকের সাদা কোটে।
তিনি একজন চিন্তাবিদ, যিনি সমসাময়িক রাজনীতি, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে নিয়মিত মতামত দেন। তার চিন্তায় আছে বাস্তবতার গভীর বিশ্লেষণ, আর আছে মানবিকতার ছোঁয়া।
সহজ-সরল জীবনযাপন, শৃঙ্খলাপূর্ণ চিন্তা ও পরিমিত কথাবার্তা — এগুলোই তাঁকে করে তুলেছে অন্যদের কাছে প্রিয় ও সম্মানিত।
তাঁর জীবন দর্শন খুব স্পষ্ট — ‘মানুষের জন্য কাজ করাই রাজনীতির মূল।
ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার স্বপন একজন চিকিৎসক, একজন রাজনীতিক, একজন মানবতাবাদী।
তাঁর পথচলা আমাদের শেখায়, আদর্শের রাজনীতি কখনও হারিয়ে যায় না।
যতদিন সৎ মানুষের প্রয়োজন থাকবে, ততদিন তাঁর নাম উচ্চারিত হবে শ্রদ্ধার সঙ্গে।