অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগম
চাটুকারিতা নয়, খুব দৃঢ়তার সাথেই বলছি – বাংলাদেশ অন্ধকারে পথ হারাবে না যত দিন জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পরিচালনার দাযিত্বে থাকবেন।। প্রায় দুই শত বছরেরও অধিক সময় ব্যাপি বিদেশী সামরাজ্যবাদী ও শোষক শ্রেণি দ্বারা বাঙালি শোষণ বঞ্চনার শিকার হয়। ১৯৭১ সালে দেশটি বঙ্গবন্ধুর ডাকে মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়ায়। একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে।বিশ্বমানচিত্রে লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে বাংলাদেেশ স্বাধীন সার্বভৌমত্বের মর্যাদা অর্জন করে। তারপর বহু ঝড় তুফান পাড়ি দিয়ে এই গরীব অনোন্নত দেশটি উন্নয়নশীল দেশের তালিকা ভুক্ত হয় । বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশটি স্বপ্ন দেখছে ২০৪০ সালের দিকে উন্নত দেশের গৌরব অর্জন করার।ইতিমধ্যেই তাঁর দূর্বার উন্নয়নের গতিশীলতা দিয়ে বিশ্বদরবারে উন্নয়নের রোল মডেল এ পরিনত হয়েছে বাংলাদেশ ।এখন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়।
নানা প্রতিকূলতা,ষঢ়যন্ত্র,বিরুধীতা,বিভ্রান্তি মুখাবেলা করে উন্নয়নের গতিধারা রয়েছে প্রশংসনীয় ভাবে গতিশীল ও অগ্রগামী। তা সম্ভব হয়েছে এক মাত্র শেখ হাসিনার ইস্পাত কঠিন নেতৃত্ব, তড়িৎ সিদ্ধান্ত গ্রহন ও বাস্তবায়নের জন্য।তিনি শত্রুর মুখে ছাই ঢেলে দিতে, কথা বলতে ভয় পান না।যদিও তাকে হত্যা করার জন্য ১৯ বার আক্রমন করেছিলো চক্রান্তকারীরা।রাখে আল্লাহ মারে কে? তিনি বেঁচে আছেন বাংলাদেশের, বাঙালির উন্নয়ন ও উন্নতির জন্য। বলা হয় বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। লেখক ও রাজনীতি বিশ্লেষক আহমেদ শফা বলেছেন “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যমজ ভাই”।শেখ হাসিনা মানে উন্নয়নের মাইল ফলক। বিশ্ব নেতৃত্বের অঙ্গনেও কুড়িয়েছেন সুনাম।বৈশ্বিক উন্নয়নে গঠনমুলক, যৌক্তি ভুমিকা রেখে যাচ্ছেন সর্বদা। বাংলাদেশ এখন ফেলনা নয়।বরং বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনে গণনা করার মত অঙ্গন।
তা ছাড়া শেখ হাসিনা অত্যান্ত পরিশ্রমি,মেধাবী,সৎ,কর্মট,বঙ্গবন্ধুর ন্যায় সময়ের সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে নিতে ও বাস্তবতা দিতে পারেন। কথায় কাজে মিল রাখেন।তাইতো বলছি- শেখা হাসিনা সরকার বার বার দরকার। যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে বাংলাদেশ, তত দিন নিরাপদে থাকবে দেশ, দেশের যানমাল, মানুষ, তাদের নিরাপত্তা।
জননেত্রী শেখ হাসিনা ভয় ডর পান না, বরং হাত খুলে কাজ করেন ও কথা বলেন মুক্ত চিত্তে।তার সামনে রয়েছে বাঙালির স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রতিছবি, পেছনে সাহসের আলোক ধারা,দুই পাশে সাহসী বাঙালি ভ্যানগার্ড হিসেতে কাজ করে যাচ্ছে। এই নেত্রী তো ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের হাতে পরিবারের সকল সদস্যকে হারিয়ে এতিম হয়েছেন।এখন আর হারাবার কিসের ভয়। বরং দেশের কল্যানে জীবন উৎসর্গ করে দিতে প্রস্তুত। সবে ধন নীলমণি ছোট বোন শেখ রেহানাকে পাশে রেখেই তিনি দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছেন।
২০০৯ সাল থেকে আওয়ামীলীগ সরকার টানা তিনটার্ম ক্ষমতায় থাকার পর ২০২৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে আবার শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে পার্লামেন্ট গঠন করেছেন। বিশ্ব তথা বাংলাদেশের আবালবৃদ্ধবনিতা শেখ হাসিনা ও তাঁর নেতৃত্বের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।পাহাড় সমান সফলতা এক মাত্র তিনিই বয়ে আনতে পারবেন। শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতৃত্বে জায়গা করে নিয়েছেন।তিনি একজন উচ্চ মাত্রার লেখকও বটে। আরো চমকপ্রদ তথ্য হলো গণভবনে যেখানে বসবাসকরেন, সেথানে নিজ উদ্যোগে একটি কৃষি ফার্ম গড়ে তোলেছেন। দেশ বাসির প্রতি তার আবেদন হলো -প্রতি বছর ফলজ, বনজ,ঔষধি তিন প্রকারের বৃক্ষ রোপন করার।কৃষি জমি অনাবাধি ফেলে না রাখার।আসুন দেখি গত তিন টার্মে আওয়ামী সরকার কি কি কাজ করে জনগণকে সেবা দিয়েছে। যদিও এতো ছোট পরিসরে লিখে শেষ করা যাবে না, তারপরও কিছু তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশকে ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় আনা হয়েছে। যার সুফল আমরা প্রতি ক্ষেত্রে ভোগ করছি।দেশকে অচিরেই স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নীত করা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে শতভাগ স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলা, যারা জ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব উদ্ভাবনী শক্তির সমন্নয়ে নিজের ও সমাজের তথা বাংলাদেশের উন্নয়ন ঘটাবে।তারপর স্মার্ট অর্থনীতি,স্মার্ট সরকার,স্মার্ট সমাজ,স্মার্ট প্রশাসন গড়ে ওঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ তখন গ্লোবাল বিশ্বের গতি ধারার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে। ১৫ বছরে মানুষের মাথা পিছু আয় বেড়েছে ৫গুন,।বাজেটের আকার এসে দাঁড়িয়েছে ১৭ গুনে। জিডপি ৭-৮ শতাংশের ঘরে ঘুরাঘুরি করছে। কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রগতির ফলে ১৮ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করার পর বিশেদে খাদ্য রপ্তানি করছে। ৪৩% নারীকে কর্মক্ষেত্রে সংযুক্ত করায় নারীর উন্নয়ন ঘটেছে কল্পনাতিত ভাবে। কর্মের ও উন্নয়নের প্রতিস্তরে নারীর অংশগ্রহন হয়েছে সাফল্যজনক হারে।ঘোষনা দেয়া হয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে কর্মক্ষম দেড় কোটি তরুনের কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃস্টি করা হবে। শিক্ষার হার ৭৪ শতাংশে উন্নীত করার পাশাপাশি দারিদ্র্যতার হার ১১% শতাংশের নীচে নামিয়ে আনার প্রচেস্টা রয়েছে অব্যহত।
চোখ ঝলসে যাওয়ার মতো যে সমস্ত কাজ করেছে এই সরকার, তার মধ্যে অন্যতম মহা অর্জন হলো পদ্মা সেতু নির্মান। তাছাড়া মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, দক্ষিন এসিয়ার সর্ব বৃহৎ কণর্ফুলি টানেল নির্মান যার নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, ঢাকা টু কক্সবাজার রেল সংযোগ,আল্ট্রা সুপার ডিজিটাল কয়লা ভিত্তিক বিদুৎ কেন্দ্র স্থাপন, মাতারবাড়ি গহীন সমুদ্র বন্দর, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু -১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট – ২ উৎক্ষেপনের পরিকল্পনা গ্রহন, সমাজের পিছয়ে পড়া জণগোষ্টি যেমন — ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টী,বেদে, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, সহায়সম্বলহীন, হিজরা সহ ভূমিহীন গৃহহীন জনগণকে দুই শতক জমি ও একটি সেমিপাকা ঘর প্রদান করে মালিকানা দিচ্ছে। এখানে উল্লেখ্য থাকে যে জমিসহ ঘরের অর্ধেক মালিকানা পারে ঐ পরিবারে প্রধান স্ত্রী সদস্য। যানজট কমানোর জন্য বহু উদ্যোগের পাশাপাশি বাস রেপিড ট্রানজিট প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, ঢাকার পূবার্চলে ১৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মানের কাজ চলমান রয়েছে,যা হবে দক্ষিন এশিয়ার অত্যন্ত তৃস্টি নন্দন ও আকর্ষনীয় এক্সপ্রেসওয়ে।
তা ছাড়া আশ্রয়ন প্রকল্প,পল্লীসঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্টা,ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ট,চলছে ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক পেমেন্টের সুবিধার্থে মোবাইল ফাইন্যানন্সিয়াল সার্ভিস, টাকা পে কার্ড ইত্যাদি বিষয়েও সরকারের নজর রয়েছে।২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের স্লোগান ছিলো ছিলো ডিজিটাল বাংলাদেশ ঃ দিন বদলের সনদ।২০১৪ সালে স্লোগান ছিলো – এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে স্লোগান ছিলো সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ।আরো অঙ্গিকার ছিলো গ্রামকে শহরের সুবিধা প্রদান, নারীর ক্ষতায়ন, লিঙ্গসমতা, শিশু কল্যাণ, মাদক নির্মূল, সন্ত্রাস- জঙ্গীবাদ দমন, গণতন্ত্র ও আিনের শাসন প্রতিষ্ঠা,সর্বস্তরে শিক্ষার মানবৃদ্ধি,সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে নিয়োগ বৃদ্ধি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করণ, শত ভাগ বিদ্যুতায়ন, জনবান্ধব আইন শৃঙ্খলা গড়ে তোলা,প্রবীণ,প্রতিবন্ধি,অটিজন কল্যাণ সাধন, অর্থহীন ও ভূমিহীনের পুর্ণবাসন, টেকসই ও জবাবদিহীমূলক উন্নয় ইত্যাদি।
বহু তর্ক বিতর্ক,আলোচনা- সমালোচনা, ভয়ভীতি,শঙ্কা, আশঙ্কা,বিভ্রান্তির পর ২০২৪ সালের নির্বাচন পারি দিয়ে ১১টি টার্গেটকে সামনে রেখে একটি নির্বাচনী ইশতেহারে মুলা ঝুলিয়েছে । দেখা যাক সেই টার্গেটগুলো কি কি এবং প্রত্যাশা পূরণে কতটুকু জনবান্ধব।যেমন—
১। দ্রব্য মুল্য সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্বক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
২। কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।
৩। আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
৪। লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে সমম্বিত কৃষি ব্যবস্থা, যান্তিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাত করণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি।
৫।দুশ্যমান অবকাঠামোর সুবিধা নিয়ে এবং বিনয়োগ বৃদ্ধি করে শিল্পের প্রসার ঘটানো।
৬।ব্যাংক সহ আর্থিক খাতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি
৭। নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বাস্থ্য সেবা সুলভ করা।
৮। সর্বজনিন পেনশান ব্যবস্থায় সবাইকে যুক্ত করা।
৯। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
১০। সাস্প্রদায়িকতা এবং সব ধরণের সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ রোধ করা।
১১। সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা ও র্চ্চার প্রসার ঘটানো।
শেখ হাসিনার জ্ন্য, বাংদেশ ধন্য।তিনি পেয়েছেন বিশ্ব মানবতার মা হিসেসে স্বীকৃতি। তিনি শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের গৌরবকে তোলে ধরে বাংলাদেশকে সন্মানের উচু স্তরে পৌছে দিয়ে নিজে হয়েছেন গৌরবান্নিত। আরো বহু খ্যাতি সন্মাননা জমা আছে তার সফলতার ঝুড়িতে।রাষ্ট্র পরিচালনা,করোনা সমস্যা মুখাবেলা, রুহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যে মহানুভবতার পরিচয় দেখিয়েছেন, তা সত্যিই অতুলনীয়। নারী বান্ধব, দেশ প্রেমি, কর্ম পাগল,সৃজনশীল, বিশ্বনেতা, গরীবের বন্ধু ইত্যাদি বহু মাত্রিক গুণের ও কর্মকৌশলের অধিকারী শেখ হাসিনাই পারবে রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে আকাশ ছোঁয়া সফলতা অর্জন করতে।আসুন ভবিষ্যতে মঙ্গল কামনায় এই নেত্রীর পাশে দাঁড়াই ও তার হাতকে করি শক্তিশালী।
লেখকঃ উপদেষ্ঠা মন্ডলির সদস্য, বাংলাদেশ কৃষক লীগ। ০১৭১৭৭৬২৭৪৫.