সোহেল রানা রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান
রাজশাহীর বাঘায় পুকুর খননের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আবদুল (৫০) নামের এক ব্যক্তির হাত ভেঙ্গে দিয়েছেন পতিপক্ষরা। শুক্রবার (১৭ মার্চ) রাত ১টার দিকে উপজেলার হিজলপল্লী গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। আহত আবদুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আবদুল হিজলপল্লী গ্রামের মৃত আতাহার হোসেনের ছেলে।
জানা যায়, উপজেলা হিজলপল্লী গ্রামের দেড় শতাধিক ব্যক্তি পুকুর খননের প্রতিবাদে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দায়ের করেন। প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে একই গ্রামের আবদুল খালেক খোকার ছেলে বজু হোসেন ভেকু নিয়ে পুকুর খনন করতে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আবদুল
পুকুর খননের প্রতিবাদ জানান। এ সময় তাকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে ডান হাত ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে স্থানীয়রা উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ভেকু নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে হিজলপল্লী গ্রামের জাহিদুল ইসলাম জানান, বাজুবাঘা ইউনিয়নের হিজলপল্লী এলাকায় ভেকু দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে অসংখ্য পুকুর খনন করা হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে বিলে বিভিন্ন উৎপাদিত ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
পুকুর খননে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় শতশত বিঘা জমিতে আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে পুকুর খননের কারনে শতশত বিঘা জমিতে রোপন করা আম গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জসসেদ গিরি জানান, বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন বিলগুলোতে যেভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে, তাতে দুই/তিন বছরের মধ্যে আর কোন ফসলি জমি থাকবে না। এদিকে
বর্ষা মৌসুমের জন্য পদ্মা নদীর সঙ্গে ড্রেন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা দরকার। পুকুর খননের কারনে অনেক সমস্যায় পড়ছে এলাকার সাধারণ মানুষ। আসঙ্কাজনক হারে কমছে ফসলি জমি।
এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি খায়রুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। এ বিষয়ে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আখতার জানান, পুকুর খননের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। রাতের আধারে পুকুর খনন করতে গিয়ে এক ব্যক্তি প্রতিবাদ
করায় তাকে মারপিট করা হয়েছে জেনেছি। বিষয়টি পুলিশকে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া যেখানে পুকুর খনন হচ্ছে, সেখানে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।