1. admin2@kalernatunsangbad.com : admin : Admin
  2. admin@kalernatunsangbad.com : Khairul Islam :
শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
শিরোনাম

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে গৃহবধুকে গণধর্ষণের অভিযোগ

  • প্রকাশ কাল বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২২
  • ১৯৪ বার পড়েছে

মোঃ মাসুদ রানা, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

স্বামী ও শ্বশুড়বাড়ীর নানা ধরণের নির্যাতন সহ্য করেও সংসারে টিকে থাকতে চেয়েছিলেন গৃহবধু। কিন্তু কয়েকদিনের জন্য বাবার বাড়ী বেড়াতে গিয়ে ফিরে এসে দেখেন তাকে তালাক দেয়া হয়েছে। এতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি পাষন্ড স্বামীর পরিবার। দেনমোহরের টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে বাড়িতে রেখে রাতের আঁধারে স্বামী ও তার বন্ধুদের দিয়ে গণধর্ষণ করানো হয়েছে রাজশাহীর বাসিন্দা ওই গৃহবধুকে।

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় এমনই একটি অভিযোগে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিত গৃহবধু নিজেই। মামলায় ধর্ষক হিসেবে তার স্বামী, মো: রাসেল রানা (২৫), স্বামীর মামা আল-আমিন (৩৫), স্বামীর বন্ধু রাসেল শেখ (২৫) ও হাফিজুলকে (২৪) আসামী করা হয়েছে। এছাড়াও সহযোগী হিসেবে শ্বশুর আব্দুল খালেক ফটিক (৫০), শ্বাশুড়ী ছালমা বেগম (৪৭) ও নানা শ্বশুড় সাইফুল ইসলামকেও আসামী করা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় মামলা দায়েরের কয়েকমাস পার হয়ে গেলেও পুলিশ একজন আসামীকে গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ বাদী ও মামলার স্বাক্ষীদের।

সরেজমিনে ও মামলা সূত্রে জানা যায়, নির্যাতিত গৃহবধু রাজশাহী জেলার মহনপুর থানার বসন্ত কেদার গ্রামের বাসিন্দা। সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার তারুটিয়া গ্রামের আব্দুল খালেক ফটিকের ছেলে রাসেল রানা ওই তাকে মোবাইলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এবং পরবর্তীতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বিয়ে করেন। রাসেল রানার বাড়িতে উভয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করতে থাকা অবস্থায় নানা ধরণের নির্যাতনের শিকার হন ওই গৃহবধু। তাকে বাড়ী থেকে বের হতে দেওয়া হয় না, কারও সাথে কথা বলতে দেয়া হয় না। এভাবেই শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় তাকে। এ অবস্থায় বেশ কিছুদিন চলার পর ওই গৃহবধু পারিবারিক সম্মতিক্রমে বাবার বাড়ী বেড়াতে যান। গত ২০২২ সালের ২৪ জুন তিনি শ্বশুরবাড়ী ফিরে এসে জানতে পারেন তাকে তালাক দেয়া হয়েছে। এ সময় গৃহবধু তাদের কাছে দেনমোহরের পাওনা দাবী করলে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন কালক্ষেপন করতে থাকে। রাত গভীর হয়ে এলে শ্বশুড়-শাশুড়ীর নির্দেশে তাকে ৪ জন মিলে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে বলে ওই গৃহবধু অভিযোগ করেন।

নির্যাতিত গৃহবধু সাংবাদিকদের বলেন, তাকে ধর্ষণ করার পর হাত-পা বেঁধে গাড়ীর নিচে ফেলে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছিল। ভোররাতে এক পর্যায়ে তাকে হাত-পা বেঁধে ভ্যানযোগে রাস্তায় নিয়ে এলে স্থানীয়রা দেখে ফেলে। এরপর প্রতিবেশী তাহাজ উদ্দিন তাকে উদ্ধার করে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মামলা করতে গেলেও মামলা নেয়নি। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় হাসপাতালে ভর্তি হই। সেখানে আমার মেডিকেল চেকআপ করার পর আদালতে মামলা দায়েল করি।

প্রতিবেশী তাহাজ উদ্দিন, পাখি খাতুন, নুরন্নাহার বেগম, ফাহিমা সুলতানাসহ অনেকেই বলেন, ঘটনার দিন রাতে চিৎকার চেচামেচি শুনেছি। সকালে হাতপা বাঁধা অবস্থায় ওই গৃহবধুকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।

এদিকে তাহাজ উদ্দিন দাবী করেন, ওই ধর্ষণ মামলায় স্বাক্ষী হওয়ার কারণে খালেক ফটিক ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।

এসব বিষয় অস্বীকার করেন অভিযুক্ত খালেক ফটিক ও তার স্ত্রী ছালমা বেগম। তারা বলেন এসব ঘটনা সাজানো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হেদায়েতুল আলম রেজা বলেন, ধর্ষণের ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আমার নেই। ওই মামলাটি আদালতে গেছে, আদালতই এর বিচার করবে।

সলঙ্গা থানার ওসি শহীদুল ইসলাম বলেন, একজন গৃহবধুকে গণধর্ষণের অভিযোগে তার স্বামীসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করেছি।

শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদসমূহ


প্রযুক্তি সহায়তায় BTMAXHOST