মোহাম্মদ মাসুদ
চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার চাঞ্চল্যকর ছাত্র হত্যার ঘটনায় গুলিতে হেফাজতে ইসলামের কর্মী নিহতের মামলায় হাটহাজারী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) রফিকুল ইসলামকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত । সাড়ে তিন বছর আগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণকে ঘিরে গুলিতে নিহত হয় হেফাজত কর্মী।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুন শুনানি শেষে এ আদশ দেন।জিজ্ঞাসাবাদ করতে হাটহাজারী থানা-পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে।
হাটহাজারী থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, গত ০৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ওই ঘটনায় হাটহাজারী মডেল থানায় দুটি হত্যা মামলা দায়ের হয়।
ঢাকা থেকে রফিকুল ইসলামকে গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ধর্মীয় ইস্যুতে তাঁর সফরের বিরোধিতা করে সেদিন হাটহাজারীতে বিক্ষোভ-মিছিল করে হেফাজত ইসলাম। তখন থানাসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে ৪ চারজন নিহত হন। নিহতদের একজন হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামের দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষার্থী রবিউল ইসলাম। ঘটনার সাড়ে তিন বছর পর গত ২৩ অগাস্ট শুক্রবার তার বাবা আব্দুল জব্বার মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয় হাটহাজারী থানার সাবেক ওসি রফিকুল ইসলামকে।
উল্লেখ্য : ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু তৎকালীন সময়ে ইসলামের বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতীয় মোদী সরকারের ধর্মীয় উস্কানিমূলক নানা পদক্ষেপে তীব্র ক্ষোভ আপত্তি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। কট্টর হিন্দুবাদীদের দ্বারা মোদি সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ও পরিকল্পিত নানা নেতিবাচক কার্যক্রম ও কর্মকান্ড ধর্মপ্রিয় ইসলামী আন্দোলনে জনবিস্ফোরণের নেয়।
মোদি সরকারের দ্বারা পরিচালিত নিজ দেশের মুসলমানদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গা ধ্বংস ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বাঁধা প্রদান মিনিস্টার সব রকম নিতিরও নির্যাতন চালায় সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর। দীর্ঘ ১৬ বছর শেখ হাসিনা স্বৈরাচার সরকারের সাথে আতাত করে বেআইনিভাবে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে সব রকমের সহায়তা করে। সরকার পতনের পর থেকে একের পর এক উঠে আসে লোমহর্ষক বাস্তবতায় সত্যতায়।
দেশের সাধারণ জনগণের বাকস্বাধীনতা, স্বাধীনতা হরন ভোট অধিকার হীন, নিরাপত্তাহীনতা বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শীদের বিচারের নামে গুনগুন হত্যা। নিরীহ সাধারণ মানুষের জীবন চিত্রে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার সরকারকে অন্ধ একতরফা সব রকমের সহায়তা দিয়ে দিয়ে যাচ্ছিল মোদি সরকার।
যা কোনভাবেই মেনে নিতে পারে নাই দেশের সাধারণ মানুষ ও সরকারবিরোধী সকল রাজনৈতিক দল। তিলে তিলে দিনে দিনে তীব্র ক্ষোভ ও ক্ষেপে উঠে দেশের সাধারণ সর্বস্তরের সকল শ্রেণী পেশার সাধারণ মানুষ । সেইসাথে ধর্মীয় রাজনৈতিক সব দলের একত্বতায় আন্দোলনের ডাক দেন। এরে ধারাবাহিকতায় জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। কালেক্রমে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের গণআন্দোলন পরিণত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গণঅভ্যুত্থানে ৫,আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়।