নিজস্ব প্রতিবেদক
ইউপি চেয়ারম্যান কায়ছার-এ-হাবীব মাসের পর মাস ধরে পরিষদে অনুপস্থিত
ভোগান্তিতে সেবাপ্রত্যাশীরা
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বেশিরভাগই আত্মগোপনে চলে যান। কয়েক মাস পর ৬ জন চেয়ারম্যান ফের দায়িত্বে ফিরলেও বাকি ৫ জনের কেউই এখনো পরিষদে ফিরেননি। এতে ইউনিয়নভিত্তিক নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সাবেক এমপি আফজাল হোসেনের সমর্থনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত কৈলাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কায়ছার-এ-হাবীব ১৪ মাস ধরে পরিষদে অনুপস্থিত।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আর কখনো অফিসে আসেননি, এমনকি উপজেলা মাসিক সভাতেও তার উপস্থিতি দেখা যায়নি।
সরেজমিনে কৈলাগ ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান অনুপস্থিত। প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, “আমি গত ১২ আগস্ট দায়িত্ব নিয়েছি। কিন্তু যোগদানের পর থেকে চেয়ারম্যানকে কখনও অফিসে দেখিনি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা নিয়মিত কাজ সম্পন্ন করি, কিন্তু চেয়ারম্যান কিভাবে স্বাক্ষর দেন বা অনুমোদন দেন তা জানি না।”
জন্মসনদ, ওয়ারিশান ও পরিচয়পত্র সংশোধনের কাজে আসা কয়েকজন সেবাপ্রার্থী জানান, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণে তারা নিয়মিত সেবা পাচ্ছেন না। ফলে সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সোহেল রানা বলেন, “চেয়ারম্যান কায়ছার-এ-হাবীব একজন আওয়ামী দোসর। তিনি তার সহযোগী হান্নানকে নিয়ে গত বছর ৪ আগস্ট বাজিতপুর বাজারে তাণ্ডব চালান। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলাসহ অন্তত পাঁচটি মামলা রয়েছে। এত মামলা থাকার পরও তিনি কীভাবে এখনো চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন, তা প্রশ্নবিদ্ধ।”
চেয়ারম্যান মো. কায়ছার-এ-হাবীব বলেন, “আমি অসুস্থ থাকায় কিছুদিন পরিষদে নিয়মিত যাওয়া হয়নি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং খুব শিগগিরই পরিষদে উপস্থিত হব।”
বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারশিদ বিন এনাম বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণের সেবায় যেন ব্যাঘাত না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।”