ওয়াসিম কামাল
বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়া যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন করেছে। দিবসটি উদ্যাপনের প্রথম পর্যায়ে ২৬ মার্চ সকালে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মান্যবর রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
পরবর্তী পর্বে মান্যবর রাষ্ট্রদূতের সভাপতিত্বে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং মাননীয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। এরপর দূতাবাসের হলরুমে বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা সভায় দূতাবাসের কর্মকর্তা ও উপস্থিত প্রবাসীগণ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য, এর ঐতিহাসিক পটভূমি এবং জাতীয় ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যের শুরুতে লিবিয়া প্রবাসী সকল বাংলাদেশিকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের অবিস্মরণীয় আত্মত্যাগ স্মরণ করেন এবং তাঁদের প্রতি গভীর সম্মান জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, এই দিনটি আমাদের জাতীয় গৌরব, পরিচয় ও অস্তিত্বের এক অমর প্রতীক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম একটি গৌরবময় ইতিহাস, যা কেবল একটি ঘটনা নয়, বরং একটি জাতির আত্মমর্যাদা ও স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল। এই যুদ্ধে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, নারী-পুরুষ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। এটি ছিল একটি জনযুদ্ধ, যেখানে প্রতিটি বাঙালি নিজের সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল শুধু ভৌগোলিক স্বাধীনতা নয়, বরং একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত আরও উল্লেখ করেন, ২০২৪ এর ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান আমাদের স্বাধীনতার চেতনাকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সকলকে গুজব ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিন প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছেন এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিশ্ব দরবারে তুলে ধরছেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূত মহান স্বাধীনতা দিবসে সকলকে দেশের উন্নয়ন, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের সমাপনী পর্বে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত, দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।