গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহ সদরে চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের বিজয় নগর গ্রামে নুরুন্নাহার (৪০) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে চার ঘন্টায় মূলহোতা মারুফা, মানিক দুই ঘাতককে আটক করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (১৯ জুলাই ২০২৩) তারিখ রাতে পার্শ্ববর্তী তারাকান্দা থানার বিশকা এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার (১৯ জুলাই ২০২৩) তারিখ রাত ৮.১০ মিনিটে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বিজয় নগর গ্রামে মৃত নুরুন্নাহার (৪০) এর রক্তাক্ত মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক কলহের যের ধরেই এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে।
কোতোয়ালী মডেল থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুল ইসলাম ফকির প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বুধবার রাত ৮.১০ ঘটিকার দিকে খবর পাই সদর এলাকার চর নিলক্ষীয়া বিজয় নগরের নুরুন্নাহার (৪০) নামে এক গৃহবধু রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। তাৎক্ষনিক পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভুঞা এর দিক নির্দেশনা ও পরামর্শে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং লাশ উদ্ধার ও সুরতহাল করা হয়।
একই সাথে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ ফারুক হোসেন, এসআই নিরূপম নাগ, এসআই আনোয়ার হোসেন, এসআই মনিরুজ্জামান, এএসআই সুজন চন্দ্র সাহা, কনস্টেবল জোবায়ের ও মিজানুর রহমানসহ একটি টিম চারদিকে ঘিরে ফেলে। সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তারাকান্দার বিশকা এলাকা থেকে হত্যাকান্ডের চার ঘন্টার মধ্যে ঘাতক চক্রের অন্যতম আসামী মারুফা ও মোঃ মানিককে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, নিহত নুরুন্নাহার গ্রেফতারকৃত আসামী মারুফার আপন ফুফু। মারুফার পিতা মাহতাব উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার মা ময়মুনা তাদের বাড়িতে বসবাস করতে থাকে। পরবর্তীতে মারুফার মা ময়মুনা ২য় বিয়ে করে আগের স্বামী মাহতাবের বাড়িতেই বসবাস করছিল। এ নিয়ে মৃত মাহতাবের পরিবারের সদস্যদের সাথে ময়মুনার পারিবারিক কহল চলছে।
এক পর্যায়ে ময়মুনাকে তার ২য় স্বামীর বাড়িতে চলে যেতে বলে এবং মৃত স্বামীর বাড়ি থেকে ময়মুনাকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। বুধবার রাতে ময়মুনার ঘরে ননদ নুরুন্নাহার গেলে তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে ময়মুনা ও তার মেয়ের জামাই মানিক তাকে জাবরে ধরে। এ সময় ময়মুনার মেয়ে মারুফা ধারালো দা নিয়ে তার ফুফু নুরুন্নাহারকে স্বজোরে কোপ দেয়। রক্তাক্ত আহত অবস্থায় নুরুন্নাহার ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং-৭৪, তারিখ- ২০/০৭/২০২৩ ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করা হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত ফারুক হোসেন এবং পুরিশ পরিদর্শক ওয়াজেদ আলী উপস্থিত ছিলেন। গ্রেফতারকৃত দুই ঘাতককে আজ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।