বেলাব(নরসিংদী) প্রতিনিধি: -দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণ করে বড় আলেম হবে এমন স্বপ্নে সন্তানকে মাদ্রাসায় ভর্তি করান এক মা। কিন্তু সেই মাদ্রাসাই শিক্ষকের হাতে একাধিকবার বলাৎকারের শিকার হয় ১০ বছরের শিশু সন্তান। অবশেষে এ ঘটনা জানতে পেরে থানায় মামলা দায়ের করেন বলাৎকারের শিকার শিশুটির মা সালমা আক্তার। কিন্তু মামলা দায়ের করেও বিপাকে পড়েছেন তিনি। মামলা তুলে নিতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অব্যহত চাপে আতংকে আছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলার সূত্রে জানা যায়,বেলাব উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের রহিমেরকান্দি গ্রামে অবস্থিত মারকাযুল সুন্নাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসায় থেকে নাজেরা বিভাগে লেখাপড়া করে লক্ষীপুর গ্রামের প্রবাসি আব্দুর রহিম মিয়ার ১০ বছরের শিশু সন্তান মোঃ আব্দুল্লাহ আল রোহান। সেখানেই উক্ত মাদ্রাসার আরবী শিক্ষক মাওলানা মুজাহিদ শিক্ষার্থী রোহানকে একাধিকবার জোড়পূর্বক বলাৎকার করে। উক্ত শিক্ষকের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে শিক্ষার্থী মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে এসে সবকিছু খুলে বলে। পরে গত ২১ মে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা সালমা আক্তার বেলাব থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ধর্ষক মাওলানা মুজাহিদকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। অভিযুক্ত আরবী শিক্ষক মুজাহিদ কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার কাগজী গ্রামের মৃত সাইফুল্লার ছেলে। সে উক্ত মাদ্রাসায় আরবী শিক্ষক হিসাবে কর্মরত।
শিশুটির মা মামলার বাদী সালমা আক্তার বলেন,আমার স্বামী বিদেশ থাকে। কিছু মানুষ চাপ দিচ্ছেন আমি যেন মামলা তুলে নেই। একারনে আমি আতঙ্কে আছি। মাদ্রাসা বা অন্য কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। আমি চাই জড়িত শিক্ষকের যেন দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ আতাউর রহমান মামলার বাদীকে চাপ প্রয়োগের কথা অস্বীকার করে বলেন,শিশুটির মায়ের কাছে আমি ইউপি সদস্য ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ হিসাবে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার জন্য অভিযোগটি তুলে নিতে বলেছিলাম। অভিযোগটি তুলে নিলে সামাজিকভাবে বসে মিমাংসা করতাম। কিন্তু প্রথমে শিশুটির মা রাজি হলেও পরে তিনি জানান তিনি মামলা চালাবেন।
মারকাযুল সুন্নাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন,হঠাৎ শুনেছি আমাদের মাদ্রাসার হুজুর মাওলানা মুজাহিদকে গ্রেফতার করেছে। পরে বিস্তারিত শুনে যা বুঝেছি শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনা যদি সত্য হয় তাহলে দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
বেলাব থানা ওসি তানভীর আহমেদ বলেন,এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জড়িতকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাদীকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছেন এমন তথ্য আমার জানা নেই।