1. admin2@kalernatunsangbad.com : admin : Admin
  2. admin@kalernatunsangbad.com : Khairul Islam :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৭:৪১ অপরাহ্ন

ময়মনসিংহে মৎসবীজ উৎপাদন খামারের রেণুপোনা বিক্রয়ে দূর্নীতি ৭৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ

  • প্রকাশ কাল বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫ বার পড়েছে

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ব্যুরো প্রধান, ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার শম্ভুগন্জ মৎসবীজ উৎপাদন খামারের ব্যবস্হাপক মোঃ শাহাদাত ইসলামের বিরুদ্ধে রেণু পোনা বিক্রয়ে কারচুপি করে তিন থেকে চারমাসে ১৯ লাখ টাকার অধিক অর্থ আত্মসাৎ এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে পোনা বিক্রয়ে সরকারি মূল্য তালিকা না টানিয়ে অধিক মূল্যে খামারিদের মধ্যে বিক্রয় করা হচ্ছে দেখতে পাওয়া যায়। বিক্রয় রশিদ ছাড়া বহু লোকের কাছে পোনা বিক্রয় করা হচ্ছে তারও সচিত্র প্রমাণ মেলে।

এছাড়াও সাংবাদিকরা ক্রেতা সেজে গোপন ক্যামেরায় পোনার সাথে পানি মিশ্রিত ব্যাগ দিয়ে কম রেনু দিয়ে বেশি ওজন দেখানোর প্রমাণও মেলে। সবধরনের প্রমাণ সংগ্রহ করে খামার ব্যবস্হাপক মোঃ শাহাদাত ইসলামের অফিস কার্যালয়ে ঢুকার সময় অফিস সহায়ক মোস্তফা কবির ওনাদের পিছনে পিছনে অনুসরণ করতে থাকে।

অফিসে গিয়ে খামার ব্যবস্হাপকের নিকট অভিযোগগুলো নিয়ে জানতে চাইলে প্রথমে পুরো অস্বীকার করেন। ক্ষমতার প্রদর্শনের ইঙ্গিত মিলে কথার স্বরে। ক্যামেরায় নিজের বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে তথ্য প্রমাণ দেখালে সাংবাদিকদের বলেন, বসেন আপ্যায়ন করি এবং কথা বলি। তখন ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সিনিয়র সাংবাদিকদের রেফারেন্স দিতে থাকেন। আর অনুসন্ধানরত প্রতিবেদকদের প্রতি মাসে তৃতীয় মাধ্যম মারফত নিয়মিত উৎকোচের প্রস্তাব করেন। কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন।

সাধারণ খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওনারা কোন চার্ট টানায়না আর কোন বিক্রয় রিসিডও দেননা। পোনা ব্যাগে পানি মিশ্রিত করে ওজনে কম দেন।সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি রেনু পোণার মূল্য ১৮০০ টাকা হলেও সাধারণ মানুষদের কাছে তা ৩২০০ থেকে ৪০০০ টাকা রাখছেন। ওজনে কম দিয়েও পুরো এক কেজি ওজনের মূল্য নিচ্ছেন।

একজন ক্রেতা জানান, ওনার কাছ থেকে ৫০০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে ৪৮০০ টাকা রিসিড দিয়ে রাখেন। যার প্রকৃত মূল্য ৩৬০০ টাকা। সাংবাদিকদের দেখে পরিচালক শাহাদাত ইসলাম ৮০০ টাকা ফেরত দিয়ে প্রকৃত মূল্য রাখলে তিনি জিজ্ঞেস করেন, আগে তাহলে বেশি রেখেছিলেন কেন? তিনি ভুল হয়ে গেছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য শাহাদাত ইসলাম বিগত সরকারের আমলে ওনার পূর্ব ভিটা বারহাট্রা হওয়ায় মদন-মোহনগন্জ-খালিয়াজুড়ি আসনের এমপি সাজ্জাদ সাহেবের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার দাপটে অস্থির করে রাখেন সংশ্লিষ্ট অফিস কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সাধারণ খামারিদের। এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কখনো সাজ্জাদ সাহেবের আত্মীয় পরিচয় দেইনি। তিনি আমার বাবার বন্ধু ছিলেন, এতটুকুই।

বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিএনপি নেতা এবং সাংবাদিকদের আঁতাত করে নতুন রূপ ধারণ করেছেন। যেসব কর্মচারী এসবের বিরুদ্ধে কথা বলতেন আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকালে তাদের উপর নেমে আসতো স্ট্যান্ডরিলিজের খড়গহস্ত।

এবিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ নাজিম উদ্দীনের সাথে কথা হলে,তিনি শুনে অবাক হন এবং বলেন আরো দুজন আমার সাথে যোগাযোগ করেছেন। আমি বিষয়টি দেখে অবশ্যই অনিয়ম করলে ব্যবস্হা নেবো। তৃতীয় ব্যক্তি মারফত প্রতি মাসে উৎকোচ প্রস্তাব দিয়েছেন জানালে তিনি বলেন, তাহলেতো ভালো নেয়াই যায় (ফানি মুডে)। প্রতিনিধি বলেন, একদিন মরতে হবে। কি হবে হারাম খেয়ে। কর্মকর্তা বলেন, ঠিকই বলেছেন। আমি নতুন এসেছি, সবকিছু গুছানো হচ্ছে,আমি আমার মতো করে দেখবো ইনশাআল্লাহ।

মৎস অফিস ময়মনসিংহ বিভাগীয় উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে তিনি বলেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজিমুদ্দিনের কাছে অভিযোগ দেন। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্হা নেবেন। প্রয়োজনে তিনিই আমাদের এখানে পাঠাবেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্হা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

অন্যান্য সংবাদসমূহ


প্রযুক্তি সহায়তায় BTMAXHOST