রংপুরের পীরগাছায় ভূয়া ভোটার তালিকা তৈরি করে গোপনে মাদ্রাসার পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠছে চৌধুরাণী ফাতেহিয়া ফাজিল(ডিগ্রী)মাদ্রসার অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে। কোন প্রচার-প্রচারনা না করেই দীর্ঘদিন থেকে একের পর এক পকেট কমিটি গঠনের ফলে ভেঙ্গে পড়েছে মাদ্রাসার যাবতীয় কার্যক্রম।এমনকি কমে এসেছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।মাদ্রাসায় কাগজে কলমে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও উপস্থিতির হার একেবাই নঘণ্য।শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।অধ্যক্ষ মাদ্রাসার জমি বন্ধক ও মাদ্রাসার উন্নয়মূলক কাজের অর্থ লুটেপুটে খাচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন সাবেক সভাপতি ও উপজেলা প্যানেল চেয়ারম্যান আরিফুল হক লিটন।এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে জেলা রংপুরের পীরগাছা সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করা হলে মাদ্রাসার গর্ভানিং বডি গঠনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে,চৌধুরাণী ফাতেহিয়া ফাজিল(ডিগ্রী)মাদ্রসার অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন থেকে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম-দুনীতি করে আসছেন।এর আগে তিনি বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি’র স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগসহ নানা কার্যক্রম চালাতে থাকেন।পরে স্বাক্ষর জালের বিষয়টি মন্ত্রীর নজরে আসলে তিনি দুণীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেন।বিষয়টি তদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্টেও প্রমানিত হয়।জাল স্বাক্ষরের মামলাসহ পীরগাছায় পুলিশ হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান দীর্ঘদিন কারাবাস করলেও দুনীতি থেমে থাকেনি।
তিনি মাদ্রাসার পরিবেশ নষ্ট করে একের পর এক পকেট কমিটি গঠন করে বিভিন্ন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।সম্প্রতি মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি)কে ভুল বুঝিয়ে গোপনে ম্যানেজিং কমিটির গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন।কোন প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই ভূয়া ভোটার তালিকা তৈরি করেন অধ্যক্ষ।এছাড়াও কাম্য যোগ্য বিহীন শিক্ষকের নাম ভোটার তালিকায় চুড়ান্ত প্রস্তাব করেন।অভিভাবক ভোটার তালিকায় কনা আক্তার,পিতা-আব্দুল করিম,পশ্চিম দাদন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,রোল নং-১৪ ও রানা মিয়া,পিতা-কালু মিয়া,দারুল উলুম মডেল মাদ্রাসা,রোল নং-১৩নিয়মিত শিক্ষার্থী হলেও এই দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবককে চৌধুরাণী ফাতেহিয়া ফাজিল(ডিগ্রী)মাদ্রসার ভোটার দেখানো হয়।এদিকে কাম্য যোগ্যতা না থাকলেও শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে ইংরেজি শিক্ষক বিনয় চন্দ্র মোহন্ত ও আমিনুল ইসলামের নাম চুড়ান্ত তালিকা করা হয়।এ ক্ষেত্রে কোন শিক্ষকের মতামত গ্রহন করা হয়নি বলে শিক্ষকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান,ভোটার তালিকা বিষয়ে আমরা জানিনা।লেখাপড়া খারাপ বলে অনেকেই আসে না।৪র্থ ও ৫মশ্রেণির ক্লাস শিক্ষক করিম সরকার ও ফজলুল হক বলেন,আমরা কনা আক্তার ও রানা মিয়া নামে কোন শিক্ষার্থীকে চিনি না।তারা কোন দিন মাদ্রাসায় আসেও নাই।
শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন,একক ক্ষতায় চলছে মাদ্রাসা।কারও কোন মতামত নেন না অধ্যক্ষ।কার নাম শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে চুড়ান্ত করা হয়েছে আমরা জানিনা।অধ্যক্ষ শিক্ষকদের জন্য টিউশন ফি’র টাকা উত্তোলন করলেও আমরা কিছু জানিনা।
এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ৩০মার্চ জেলা রংপুরের পীরগাছা সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন সাবেক সভাপতি ও উপজেলা প্যালেন চেয়ারম্যান আরিফুল হক লিটন।এতে বিবাদী করা হয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি),উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সভাপতি ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সহ ৬জনকে।পরে চলতি দায়িত্বে থাকা সিনিয়র সহকারি জজ মেহেরা মাহবুব কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান স্বাক্ষর জালের বিষয়টি তিনি অস্বীকার বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ গুলো মিথ্যা।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি)ওচৌধুরাণী ফাতেহিয়া ফাজিল(ডিগ্রী)মাদ্রসার বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি এ.ডব্লিউ.এম রায়হান শাহ্ বলেন,ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি।যদি ভোটার তালিকায় অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে গুরুতর সহকারে দেখবো এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।