শিবলী সাদিক খানঃ
ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত সদর উপজেলা যা ১১ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ময়মনসিংহ জেলার ১৩টি উপজেলার একটি উপজেলা এবং জেলার মধ্যভাগে অবস্থিত। ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর পাশে চরাঞ্চলে ৫টি ইউনিয়ন, দক্ষিণে পাশে ৬ টি ইউনিয়ন ও একটি সিটি কর্পোরেশন নিয়ে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা গঠিত। সদর উপজেলার সীমানা সংলগ্ন: উত্তরে নকলা ও ফুলপুর উপজেলা, দক্ষিণে ত্রিশাল ও ফুলবাড়ীয়া উপজেলা, পূর্বে ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুর উপজেলা এবং পশ্চিমে মুক্তাগাছা ও জামালপুর সদর উপজেলা।
প্রশাসনিক সদর থানা গঠিত হয় ১৮৬৭ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। এ উপজেলার উপর দিয়ে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী ও সুতিয়া নদী প্রবাহিত হয়েছে।
এ উপজেলার মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১০৩টি যার মধ্যে ৩০টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ উপজেলায় দুদিন পর ২১ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বভাবিক রয়েছে।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনগণ যাকে চাইবে সেই জয়ী হয়ে আসবে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি। চলমান উপজেলা নির্বাচনকে অর্থবহ করাই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন চান যেখানে জনগণ তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারেন।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫ (পাঁচ) জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে তিনজনই সবার নজর কেড়ে নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা না দেওয়ার তফসিল ঘোষণার পর থেকে জমে উঠেছে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন। ২১ মে তারিখে প্রার্থীরা নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন কৌশলে ভোটারদের মন জয় করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।
এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী ভোটারদের মাঝে বিচরন করছেন । উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৫ জন আলহাজ্ব আশরাফ হোসাইন, সিরতা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আবু সাঈদ, মোঃ আল আমীন আলভী, মোঃ মনিরুজ্জামান ও মোঃ হোসাইন নূর মুহাম্মদ আনির।
স্থানীয় সাংসদ মোহিত উর রহমান শান্ত সমর্থিত নেতা কর্মীরা উপজেলা নির্বাচনে দোয়াত কলমের প্রার্থী মোঃ আবু সাইদ এর পক্ষে ভোট প্রার্থনায় জোড়ালো ভূমিকা রাখছেন। অপর দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ট্রাক প্রতিকের সতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীম সমর্থিত নেতা কর্মীরা উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া প্রতিকের প্রার্থী আশরাফ হোসাইন এর পক্ষে ভোট প্রার্থনায় ব্যাপক প্রচার প্রচারণায় ভূমিকা রাখছেন। এছাড়া সাধারণ ভোটারদের উপর ভরসা করে আনারস প্রতিকের প্রার্থী মোঃ আল আমীন আলভী ভোট প্রার্থনা করছেন। অপর দই প্রার্থী মনিরুজ্জামান ও মোঃ হোসাইন নূর মুহাম্মদ আনির মাঠে রয়েছেন। জাতীয় পার্টি সদর উপজেলা রওশন গ্রুপ ও মহানগরের একাংশ ঘোড়া প্রতিকের পক্ষে এবং জেলা জাতীয় পার্টির একাংশ দোয়াত কলমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জনসমর্থন আদায় করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক, পারিবারিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন, প্রার্থীরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠক, গণসংযোগ সহ ভোটারদের কাছে নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরছেন।
সদর উপজেলা নির্বাচনের হালচাল একাধিক ইউনিয়নের স্থানীয় জনসাধারণ ও জনপ্রতিনিধিদের নিকট জানতে চাইলে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের পক্ষে নেতাকর্মীদের দ্বিধাবিভক্তির প্রভাব পড়বে বলে সচেতন মহল মনে করছেন। অপর দিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সুযোগ সুবিধার কথা বিবেচনা করে সংসদ সদস্যের আনুকল্য লাভের চেষ্টা করছেন। তবে নির্বাচনে কোন জনপ্রতিনিধি বা নেতার প্রভাব নিয়ে কেউ কারো প্রতি গুরুতর অভিযোগ করতে দেখা যায়নি। জয় পরাজয়ে ঘোড়া ও দোয়াত কলম আলোচনায় রয়েছে। নির্বাচন চলাকালীন সময় প্রার্থীদের ফোন করে না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ভোটারদের। এর সত্যতা প্রমাণের জন্য এ প্রতিবেদক প্রার্থীদের নাম্বারে ফোন করা হলে তাঁরা কেউ ফোন রিসিভ করেননি। এক্ষেত্রে ভোটার উপস্থিতি কম বা হতাশাজনক হলে, জয় পরাজয় এর হিসাব নিকাশ পাল্টে যেতে পারে।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় এগিয়ে রয়েছে টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে এম এ মোতালেব, এরপর বই প্রতীক নিয়ে নাদিম মহমুদ, টিয়াপাখি প্রতীক নিয়ে ওয়াহিদুজ্জামান মিলন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় রয়েছে হাঁস প্রতিকের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা সুলতানা কাজল, এরপর কলস প্রতীক নিয়ে আফরোজা হক কলি এগিয়ে রয়েছে বলে ব্যপক জনশ্রুতি সৃষ্টি হয়েছে। ভোটের সমীকরণে এর ব্যতিক্রম হলেও হতে পারে।।