ওয়াসিম কামাল লিবিয়া থেকে
লিবিয়া থেকে অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনের জাতীয় কর্মসূচি ঘোষণা উপলক্ষে গতকাল ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন লিবিয়ার মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মেজর জেনারেল এমাদ মোস্তফা আল-তরাবলুসি। এতে লিবিয়ায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। এই সভায় বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে।
সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন কর্মসূচির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি জানান, অক্টোবর ২০২৫ থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির আওতায় প্রাথমিকভাবে মিশর, নাইজার, নাইজেরিয়া এবং বাংলাদেশের হাজারো অভিবাসীকে নিরাপদে দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া মানবিক নীতি, নিরাপদ পরিবহন, যথাযথ খাদ্য ও আবাসন নিশ্চিত এবং সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের সহযোগিতায় সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া অভিবাসীদের জরিমানা মওকুফ করে বহির্গমণ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস নিবন্ধিত অভিবাসীদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের জন্য লিবিয়ার জাতীয় ঐক্যমতের সরকার, বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করছে। লিবিয়া সরকারের সহযোগিতায় অক্টোবর ২০২৫ মাসে তিনটি ফ্লাইটের মাধ্যমে ৯২৮ জন বাংলাদেশিকে নিরাপদে দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। এছাড়া ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে আরও ৩১০ জনকে লিবিয়া সরকারের সহযোগিতায় দেশে প্রত্যাবাসন করা হবে। তিনি বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে লিবিয়া সরকারের সহযোগিতার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার সবসময় নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। অনিয়মিত অভিবাসীদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত আড়াই বছরে দূতাবাসের সহায়তায় লিবিয়া থেকে সাড়ে সাত হাজারেরও অধিক বাংলাদেশিকে দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার মানব পাচার প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং মানব পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। একইসঙ্গে মানব পাচার প্রতিরোধে লিবিয়ায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে দূতাবাসের কার্যকর ও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।