মোঃ সোহেল রানা রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নের দাবিতে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় হাসপাতাল চত্বরে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করেছে “রাজশাহী সচেতন নাগরিক সমাজ”।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা হাসপাতালের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগসহ একাধিক দাবি তুলে ধরেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা হাসপাতালের সার্বিক সেবা ও কার্যক্রম উন্নয়নে যে দাবি গুলো তুলে ধরেন, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: চিকিৎসা ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি (যেমন এক্স-রে মেশিন, সিটি স্ক্যান, এমআরআই) সংযোজন। পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ। দক্ষ জনবল গঠনে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি।
হাসপাতালে রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত বেড, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা। বহির্বিভাগে দালাল সিন্ডিকেট সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা। বিনামূল্যে সরকারি ওষুধের পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যদিও হাসপাতালটি রাজশাহী ও পার্শ্ববর্তী বিভাগগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, তবুও সেখানে রয়েছে একাধিক গুরুতর সমস্যা।
অনেক আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি থাকলেও তা চালাতে দক্ষ টেকনোলজিস্টের অভাব রয়েছে, ফলে যন্ত্রপাতির কার্যকারিতা কমে যাচ্ছে।
প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা হাসপাতালের ধারণক্ষমতার তুলনায় অনেক বেশি। ফলে রোগীদের বারান্দা ও মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হয়, যা অত্যন্ত অমানবিক ও স্বাস্থ্যসেবার মানহানিকর।
বিশেষ করে নার্সিং ও ল্যাব টেকনিশিয়ানদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার অভাব রয়েছে, যা চিকিৎসা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
মানববন্ধন শেষে একটি স্মারকলিপি হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়, যেখানে সকল দাবির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই কর্মসূচির আয়োজকরা রাজশাহী বিভাগের সকল সচেতন নাগরিকদের ভবিষ্যতে এ ধরনের আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, “সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠা সম্ভব।”