অষ্টগ্রাম প্রতিনিধি।
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম বড় হাওরের বৈঠাখালী নদী শুকিয়ে প্রায় দশ হাজার একর বোরো জমিতে সেচ বন্ধ। বিপাকে কয়েক হাজার কৃষক। পানির অভাবে একমাত্র ফসল বোরোধান ক্ষতিগ্রস্তের আশংকা। জলডুবের বাঁধ কেটে ও নদীতে অস্থায়ী ড্রেন খননের মাধ্যমে দ্রুত সেচ প্রকল্প গুলো চালুর দাবি কৃষকদের।
অষ্টগ্রাম উপজেলার বৈঠাখালী নদীর দু’তীরে তিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার একর জমিতে বোরো ধান আবাদে পানি সেচের প্রধান উৎস্য এই নদী। গত কয়েক বছর ধরে জানুয়ারি মাসের দিকে নদীর দুই প্রাপ্ত শুকিয়ে বন্ধ হয়ে যায় পানি চলাচল। নদীর তলদেশে আটক কৃত পানিতে চলে বোরোধানের সেচ।
চলতি মৌসুমে হাওরে বৃষ্টিপাত না থাকায় বর্ষার আটকানো পানি শেষ হয়েগেছে, ফলে প্রায় প্রায় দশ হাজার একর বোরো জমিতে ১০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ৭-৮টি সেচপ্রকল্প। সেচের অভাবে সবুজ ধানের জমি ক্রমেই ফেকাসে রূপ ধারণ করায় উদ্বিগ্ন কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা , পূর্ব অষ্টগ্রাম ও সদর ইউনিয়নের গায়েলা, বীল বল্ললি, ছাতিয়া, কেউডা, কবিরখান্দানের চর, কান্তা ও বাঁধাঘাটসহ হাওরের ৭-৮টি সেচ প্রকল্পগুলো ১০দিন ধরে নদী শুকানোর কারণে বন্ধ হয়ে আছে। এতে, অনেক জমি পানির অভাবে ফেটে যাচ্ছে।
হাওরাঞ্চলে এখন বোরোধানের চারায় ‘শীষ’ বের হচ্ছে, এই সময়ে জমিতে পানি না থাকায় বাহির হবে দুর্বল ‘শীষ’, এতে ধানে বাড়বে চিটার পরিমান। অর্জিত হবে না কাঙ্ক্ষিত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা। ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষক পরিবার।
গায়েলা সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার মোঃ রাজিব আহমেদ (৩২) জানান, জরুরী ভিত্তিতে বন্ধ হওয়া সেচ প্রকল্পগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে সচল করতে, জল ডুবের বাঁধ কটতে হবে এবং বৈঠাখালী নদীতে দুই কিলোমিটার ‘ড্রেন খনন’ করে সেচ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। নতুবা চরম ক্ষতি হবে বোরো ফসলের।
অষ্টগ্রাম বড় হাওরে কৃষক হুমায়ুন কবির দানা (৫৪) বলেন, আমরা কৃষক মানুষ, আমাদের জীবন-জীবিকা চলে এই ধান উৎপাদনের উপর। হাওরে তীব্র সেচ সংকট দ্রুত সমাধানসহ নৌ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বৈঠাখালী নদী খননের দাবি করেন।
কেউডা সেচ প্রকল্পের পরিচালক মোঃ ইউনূস আলী (৬২) বলেন, গাঙ্গ শুকানোর কারণে ১০-১২ দিন ধরে সেচপাম্প বন্ধ। গাঙ্গে ২কিলোমিটার ড্রেন খনন ও জলডুবের আটকানো পানি দিয়ে দ্রুত সেচ প্রকল্প গুলো চালু করা দরকার।
স্থানীয় সদর ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু বলেন গত ২১ মার্চ বিএডিসি (সেচ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আসাদুল হক ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ হালিম সাহেবকে নিয়ে সরজমিনে হাওর পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বিগত সরকার অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে হাওরের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। পলি জমে হাওরের নদী-নালা খাল-বিল গুলো ভরাট হয়ে গেছে হাওরের কৃষি শিল্পকে রক্ষা করতে “দীর্ঘমেয়াদী হাওর উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রনয়ণ দরকার “।
বর্তমান সেচ সংকট নিরসন বিষয়ে আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জরুরী ভিত্তিতে এর সমাধানে চেষ্টা করবো।