মাইনুল হক মেনু, কটিয়াদী :
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে গুরুত্বপূর্ণ চারটি প্রতিষ্ঠানসহ একাই ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলাম। গুরুত্বপূর্ণ চারটি প্রতিষ্ঠান হলো- উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রশাসক, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও কটিয়াদী পৌর প্রশাসক এবং বাকী পঞ্চাশটি প্রতিষ্ঠান হলো উপজেলার ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি।
জানা যায়, ৫আগস্ট সরকার পতনের পর উপজেলা চেয়ারম্যানদের অপসরণের পর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব আসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপর তিনি উপজেলা প্রশাসকে দায়িত্ব পালন করছেন। পৌর মেয়রকে অপসারণ করার পর দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। বদলী জনিত কারনে গত ৫ডিসেম্বর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক সাফফাত আরা সাঈদ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট তার দায়িত্ব হস্থান্তর করেন করেন। ফলে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও পৌর প্রশাসকের দায়িত্বও পালন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলাম। গুরুত্বপূর্ণ চারটি দপ্তরের দায়িত্ব¡ একাই সামলাতে হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। বর্তমানে ভূমি অফিসে গিয়ে পাচ্ছেন না তাদের কাঙ্খিত সেবা। ভূমি সেবা প্রত্যাশীদের ভাষ্যমতে উপজেলায় সহকারী কমিশনার ভুমি না থাকায় সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয় সেবা নিতে আসা লোকজনকে। জমির খারিজ ৩০দিনে দেওয়ার কথা থাকলেও সময় মতো পাচ্ছেন না জমির খারিজ। অপরদিকে রয়েছে ভূমি মন্ত্রনালয়ে সার্ভার সমস্যা। খাজনা খারিজ না করতে পেরে সেবাগ্রহিতাগণ তাদের প্রয়োজনে জমি বিক্রি ও রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না। ৫আগস্ট সরকার পতনের পর উপজেলা সকল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার দায়িত্বে থাকা সভাপতিকে অপসারণ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ উপজেলার ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার । লোকবল সংকটের কারণে যথা সময়ে সঠিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে থাকে। এছাড়াও অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকাদের কষ্ট তখন বেড়ে যায় যখন সঠিক সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় বিলম্ব হয়ে থাকে। তবে অচিরেই এই সমস্যা সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ।
ভুমি অফিসে সেবা নিতে আসা মো. আব্দুর রহিম জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার একাই চারটি দপ্তরে দায়িত্বে থাকায় সঠিক সময়ে আমরা সেবা পাচ্ছি না। একদিকে সার্ভারের সমস্যা অন্যদিকে এসে দেখি স্যার নাই। জমির খারিজ করতে ঘুরতে হচ্ছে আমাদের।
জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা গ্রামের নূর আলম জানান, খারিজের আবেদন করে দিনের পর দিন ঘুরতেছি। খারিজ হচ্ছে না। ছেলে বিদেশে যাবে সব কিছু রেডি এখন খারিজ না থাকার কারণে জমি রেজিস্ট্রি দিতে পারছি না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলাম জানান নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই গুরুত্বপূর্ণ চারটি দপ্তর ও ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পড়েছে আমার ওপর। প্রতিটি দপ্তরের দায়িত্বই সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার চেষ্টা করছি। যদিও আমার জন্য এটা অনেক বড় চাপ। তারপরও সরকারি বিধান পালন করতে হচ্ছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) যোগদান করলে তখন দায়িত্ব কিছুটা কমে যাবে।