নিজস্ব প্রতিবেদক :
হাওর অঞ্চলের সিনিয়র সাংবাদিক মোক্তার হোসেন গোলাপ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ফেঁসে গেছেন। বিগত ২০২০সালে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানায় ইতালি প্রবাসী শেখ ইকবাল ও বাবু শেখ কে আসামি করে পুলিশের এসআই নজরুল ইসলাম এই মামলাটি করেছেন। পরে ওই মামলায় সাংবাদিক গোলাপের বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয় । সাংবাদিক গোলাপের দাবি প্রবাসী ইকবালের যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা হয়েছে তার সাথে কোন রকম সম্পর্ক ছিলনা। তিনি শুধু সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ষড়যন্ত্রের শিকার বলে সাংবাদিক গোলাপ জানিয়েছেন।
জানা গেছে দেশ যখন করোনায় আতঙ্ক ঠিক তখন ইতালি প্রবাসী শেখ হোসাইন মোহাম্মদ ইকবাল নিজ বাড়ি ঘাগড়াতে আসেন। এই খবর শুনে২০২০ সালের১৩ মার্চ মিঠামইন থানার পুলিশের এস আই নজরুল ইসলাম এবং এ এস আই কিরণ মন্ডল ইকবালের বাড়িতে এসে করোনার ভয় দেখিয়ে ১ লাখ টাকা চাদা দাবি করেন বলে অভিযোগ আনেন ইকবাল ও পরিবারের লোকজন। ওই সময় ইকবালের পুলিশের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করা ভিডিও বার্তা ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়। এ নিয় দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হলে মিঠামইন থানার এস আই নজরুল ইসলাম ফেসবুকের ভিডিও বার্তাটি মিথ্যা দাবী করে বিগত ২০২০সালের ২২মার্চ মিঠামইন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন । এই মামলায় আসামি করা হয় শেখ হুসাইন মোহাম্মদ ইকবাল এবং বাবু শেখ কে। মামলা করার পরপরই পুলিশ শেখ ইকবাল কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত ৮দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন । রিমান্ড শেষে শেখ ইকবাল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দিতে সাংবাদিক গোলাপ এর উপর প্ররোচনার অভিযোগ আনেন । তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করে ‘ সাংবাদিক গোলাপের কথায় একটা সাক্ষাৎ কার দেই।তখন গোলাপ বলে সাক্ষাৎ কার হয়নি। পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনতে হবে ।তখন গোলাপের প্ররোচনায় আমি এক পর্যায়ে দারোগার বিরুদ্ধে ১লাখ টাকা চাদা দাবির অভিযোগ করি একটি ভিডিও তে।” ইকবালের ছোট ভাই শেখ ইফরান ও পুলিশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে।
শেখ ইকবালের জবানবন্দির পর পরই ২০২০সালের ১০মে সাংবাদিক গোলাপকে গ্রেফতার করা হয়।সে জন্য তিনি ৫মাস৫দিন কারাগারে ছিলেন।
সাংবাদিক মোক্তার হোসেন গোলাপ ” বিডি চ্যানেল ফোর “-এর মিঠামইন প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমি শুধু সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।এর বেশি কিছু না। শেখ ইকবালের বক্তব্যের একটি ভিডিও বার্তা ‘ বিডি চ্যানেল ফোর ‘ এ সমপ্রচার করা হয়েছে। এ নিয়ে কোন মামলা হয়নি।
শুধু ফেসবুকের ভিডিও বার্তাটিকে কেন্দ্রকরে মামলা করা হয়েছে। পুলিশকে নিয়ে শেখ ইকবালের যে ভিডিও বার্তাটি ভাইরাল করা হয়েছে তা সাংবাদিক গোলাপের ধারন করা না দাবী করা হচ্ছে । সাংবাদিক গোলাপ আরও জানান আমি পুলিশ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের রোষানলের শিকার হয়েছি। বিডি চ্যানেল ফোর এর সম্প্রচার করা ভিডিও এবং ফেসবুকের ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখতে একই রকম । তবে ইকবালের বক্তব্যের ধরন একরকম না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাজউদ্দীন আহমেদ বিষয় গুলো খতিয়ে দেখেননি। শুরু ইকবালের দেয়া স্বীকারোক্তি বক্তব্যের উপর ভিত্তিতে শেখ হোসাইন মোহাম্মদ ইকবাল, শেখ বাবু আহম্মদ এবং সাংবাদিক মোক্তার হোসেন গোলাপ কে আসামি করে তাড়াতাড়ি করে আদালতে চর্জশিট দাখিল করে দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন । তবে ইকবালের একাধিক ভিডিও সম্পর্কে কোন মন্তব্য নেয় চার্জশিটে। নেয় মোবাইল ফরেনসিক রিপোর্ট ও। সাংবাদিক গোলাপ এই মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা থেকে অব্যাহতি চাচ্ছেন।
এদিকে পুলিশের করা এই চাঞ্চল্যকর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার বিচার কাজ শুরু হয়েছে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে। মামলার প্রধান আসামি শেখ ইকবাল উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে তিনি এখন পলাতক আছেন । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ইকবাল পরিবার পরিজন নিয়ে ইতালিতে বসবাস করছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে ইতিমধ্যে কয়েকবার মামলার সাক্ষীদের নামে সমনও জারি করা হয়েছে।তবে আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসতেছেন না কেউ । সাংবাদিক গোলাপকে আইনী সহায়তা দিচ্ছেন অ্যাডভোকেট কাউসার হোসাইন এবং শেখ বাবুর পক্ষে রয়েছেন অ্যাডভোকেট বিল্লাল মজুমদার।