শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট অবনী মোহন দাশ এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্যকালে নিজেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও এমপির মনোনীত প্রার্থী বলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ দেখা দেয় স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও এমপি ড. জয়া সেনগুপ্তার সমর্থক সহ জনগণের মধ্যে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বর্ধিত সভা করে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য বলেছেন। এমনকি কোন এমপি ও মন্ত্রীর স্বজনরা নির্বাচন না করা সহ কেউ যেন স্থানীয় নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেইসব নির্দেশনাও প্রদান করেন। এসব নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট অবনী মোহন দাশ নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ও এমপির মনোনীত প্রার্থী বলে প্রচার করেছেন।
ভিডিও বক্তব্যে তিনি বলতে শোনা যায়, “আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও এমপির মনোনীত ও সহযোগী প্রার্থী হিসেবে আগামী বুধবার (৮ মে) ঘোড়া মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করার প্রার্থনা জানান”।
এরপূর্বে তিনি এক সভায় আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজের ৯৮% অবদান নিজের নামে আখ্যায়িত করার ভিডিও বক্তব্য ভাইরাল হয়। এরই মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদে শাল্লায় মানববন্ধন করা হয়েছিল দুইধাপে। বরাবরই অবনী মোহন দাশ এমন লাগামহীন কথাবার্তায় জনমনে বির্তকের সৃষ্টি করছেন বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত করেছেন দলীয় কোন প্রতীক নেই। জনগন এত বোকা নয়, যাদেরকে ইচ্ছে তাদেরকেই ভোট দিবেন। তবে নির্বাচন করার স্বার্থে অনেকেই কথা বলেন।
শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শাল্লা ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার মিয়া জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন উপজেলা নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ। অবনী মোহন দাশ যে বক্তব্য দিছেন এটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি এমপি মহোদয়ের সাথে কথা বলছি, এম পি মহোদয় বলেন আমার কোন মনোনীত প্রার্থী নেই৷ অবনী বাবু এর আগেও আঞ্চলিক মহাসড়কের ৯৮% কাজ সে করছে বলে দাবী করলে আমরা প্রতিবাদ করেছি।
শাল্লা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল-আমিন) বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বর্ধিত সভায় ক্লিয়ার করেছেন এবারের উপজেলা নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ। কাউকে কোন মনোনয়ন দেওয়া হয়নি৷ উনি (অবনী বাবু) যে বক্তব্য দিচ্ছেন, উনি নিজেই আমাদের প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে প্রতিটা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিরোধীতা করেছেন। এমনকি উনি নিজে বিগত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। উনি একটা বিশ্বাসঘাতক ও প্রতারক।
দিরাই-শাল্লার মাননীয় এমপি ড. জয়া সেনগুপ্তা জানান, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা মেনে কাজ করি। উপজেলা নির্বাচনে কোন এমপি ও মন্ত্রী যেন প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেজন্য সরকার থেকে নিষেধ করা হয়েছে। আমার কোন মনোনীত প্রার্থী নেই। সবাই যার যার নির্বাচন করছেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক জানান, এমপি মহোদয় অবনী বাবুকে ব্যক্তিগতভাবে বললে আমরা জানিনা। শাল্লায় এমপি মহোদয়ের কোনো মনোনীত প্রার্থী থাকলে অন্তত আমাদেরকে ঘরোয়াভাবে ডেকে বলতেন উনি আমার মনোনীত প্রার্থী তার পক্ষে কাজ করুন। এমপি মহোদয় এইরকম কোনো কথা বা নির্দেশনা দেন নাই।
দপ্তর সম্পাদক অরিন্দম চৌধুরী সাগর বলেন, যেহেতু দলীয় কোনো প্রতীক নাই তাহলে মনোনীত প্রার্থী বলা প্রশ্নই আসে না। কেউ যদি বলে এটা তার নিজস্ব ব্যপার। এমপি মহোদয় বলেছেন, আপনাদের যাকে ভাল লাগে তার পক্ষেই কাজ করুন।