হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ):
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ না কাটতেই কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ফের প্রথম ধাপেই শুরু হয়ে গেছে উপজেলা নির্বাচনের আমেজ। এ নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিরামহীন দৌড়ঝাঁপে সরগরম হয়ে উঠছে নির্বাচনী মাঠ ঘাট। প্রতিদিন চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্রই আলোচনা চলছে কে হচ্ছেন এবার চেয়ারম্যান কিংবা ভাইস-চেয়ারম্যান। কার জনপ্রিয়তা কেমন। অতীতে কে, কেমন কাজ করেছেন ইত্যাদি।
সূত্র মতে, এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি, থাকছে না দলীয় প্রতীক। যে কারণে প্রেক্ষাপটও ভিন্ন হতে পারে এবার। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় বিশ্লেষকদের ধারণা, বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের ভোট এবারের নির্বাচনে একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে। কেননা, সাতজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনই আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক কমিটির পদধারী বড় নেতা বটে। তাই যে যত বেশি বিএনপির ভোট টানতে পারবেন, সে প্রার্থীরই বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে জয় ছিনিয়ে নিতে সব প্রার্থীই মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর থেকেই ভোটারদের বাড়ি বাড়ি বিরামহীন গণসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সাথে নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। অনেকেই আবার উঠান বৈঠকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। আগামী ৮ মে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন নির্বাচন কমিশন। আর তাই মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পরেই প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।
এবার হোসেনপুর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভিপি এম এ হালিম। সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ শাহ মাহবুবুল হক, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহেল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা রুনু, ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ হোসেন কবির, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোবারিজ ও সাবেক পেশকার নাজমুল আলম। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো: আলামিন অপু, শফিউদ্দিন সরকার বাচ্চু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সেলিনা সারোয়ার এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল কাদির স্বপনের ছোট মেয়ে পারভীন আক্তার জেনি ভোটের মাঠে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রয়েছেন।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে, সাধারণ ভোটার ও কর্মী-সমর্থকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জনসমর্থন সব সময় ক্ষমতার পক্ষে থাকলেও নীরব ভোট বিপ্লবে এবার অনেক কিছুই পাল্টে দিতে পারে। তাই এখন শুধু অপেক্ষার পালা, ৮ মের নির্বাচনী ফলাফলে কে পরেন জয়ের মালা।
এ দিকে স্থানীয় বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এবার বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও বিএনপির সমর্থকদের ভোট একটি বিরাট ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে। তাই এবার আওয়ামী লীগ ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ পাবে না। কেননা একজন ছাড়া আওয়ামী লীগের সব প্রার্থীই এবার মাঠে আঁটঘাট বেঁধে নেমে পড়েছেন। তবে সাধারণ ভোটারদের ধারণা, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ত্যাগীরা মূল্যায়িত হবে। কেননা এবারের নির্বাচনে যেহেতু দলীয় প্রতীক নেই, সেহেতু সবাইকে জনপ্রিয়তা যাচাই করেই উপজেলা নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে হবে।