মোহাম্মদ খলিলুর রহমান:-
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৬০ বছর পর জাতীয় শিশু দিবসে ৩০০ তম সিজারিয়ান অপারেশনে নবজাতকের জন্ম হয়।
দীর্ঘ দুই বছর পর ১৭ মার্চ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় কোন ধরনের ইনফেকশন ছাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবসে তিনশ তম সিজারিয়ান অপারেশনে মাধ্যেমে নবজাতকের জন্ম হয়।
এর আগে ২০২২ সালের ২৮ এপ্রিল দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে এক প্রসূতি মায়ের সিজারিয়ানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো অস্ত্রোপচার কার্যক্রম চালু করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের চিকিৎসক চাহিদার প্রয়োজনে ২০১৮ সালের ৩১ শয্যা হাসপাতালটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়। এরপর থেকে একাধিকবার উদ্যোগ নিলে ও হাসপাতালে পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদি, এনেস্থেসিয়া ডাক্তার ও জনবল সংকটের কারণে অপারেশন থিয়েটার চালু করা সম্ভব হয়নি। গত দুই বছর আগে নতুন অপারেশন থিয়েটার ও একজন গাইনী কনসালট্যান্ট হাসপাতালে নিয়োগ পাওয়ায় অপারেশনের সুযোগ তৈরি হয়।
বিনামূল্যে তিনশ তম সিজারে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানের মায়ের নাম শোভা আক্তার। তার স্বামীর নাম স্বন্দীপ। বাড়ি বেতিয়ার কান্দি, কুলিয়ারচর ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া তাসমিনের নেতৃত্বে সিজারিয়ান অপারেশন করেন এনেস্থেসিয়া ডা. মাহবুবুর রহমান, সার্জন ডা. কামরুন্নাহার দিলু ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: রাবেয়া আক্তার, মেডিকেল অফিসার ডা: মুবাশ্বির আহমেদ।
নবজাতক কন্যা সন্তানের পিতা স্বন্দীপ বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সিজার করালে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা ব্যয় হতো। যা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে এই সুযোগ পেয়ে খুব খুশি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া তাসমিন বলেন, দুই বছর আগে এই হাসপাতালটিতে ছিল চিকিৎসক সংকট। ছিলনা আলট্রাসনোগ্রাফি, ইকো মেশিন, ইসিজি মেশিন, অপারেশন থিয়েটার। স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, নার্সসহ সকল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দরখাস্ত দিয়েছি। তাদের সহযোগিতায় অল্প দিনের মধ্যে অপারেশন থিয়েটার চালু করি। আজ বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সেবার মান উন্নয়ন ও সার্বিক বিষয় জরিপে হেল্থ সিস্টেম পারফরেন্সে ৪২৫টি উপজেলার মধ্যে ১০ম স্থান পেয়েছে। কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মধ্যে প্রথমবারের মতো শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছে বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। চিকিৎসা ও সেবার মান ভালো হওয়ায় এ উপজেলার রোগীরা দূর দূরান্তে না গিয়ে সেবা নিতে ছুটে আসে এ হাসপাতালে। আজ রোববার দুটি অপারেশনের মধ্য দিয়ে ৩০০তম সফল সিজারিয়ান সম্পূর্ণ হয়। এই সাফল্যের জন্য ধন্যবাদ জানায় সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম স্যার সহ সংশ্লিষ্ট মেডিকেল অফিসার, সিনিয়র স্টাফ নার্স (ওটি) সহ অপারেশন থিয়েটার সংশ্লিষ্ট সকলকে ।