তৌহিদুল ইসলাম সরকার, স্টাফ রিপোর্টার:
গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে মাছ শিকারীদের মিলন মেলায় ভোরের সূর্য ওঠার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকা ও আশে পাশের হাজারো মানুষজন জড়ো হতে থাকে বাপাইল বিলের পাশে। কারো হাতে পলো,কারো হাতে জাল সবার অপেক্ষা মাছ শিকারে।
শনিবার (৪ নভেম্বর ) ভোরে নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ও শেরপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যেবাহী বাপাইল বিলে আনন্দগণ পরিবেশে হাজারো মানুষের মাছ ধরার মিলন মেলা ‘হাইত উৎসব’এক আনন্দ আয়োজনে পরিনত হয়েছে।
হাইত উৎসবে মাছ শিকার করতে ভোর থেকে হাজার হাজার সৌখিন মাছ শিকারী তাদের জাল-পলোসহ মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে হই-হুল্লোড়ের এ আনন্দ আয়োজনে অংশ গ্রহন করেন। হাইত উৎসবে স্থানীয়রাও তাদের দূর-দূরান্ত থেকে আসা আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে হই-হুল্লোড় করে ভোর থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত বাপাইল বিলে মাছ শিকার করেন।
এলাকাবাসী জানান, গতকাল এক সপ্তাহ আগে থেকে হাইত উৎসবে মাছ ধরার জন্য বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়। মাইকিং শুনে গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার ফজর পর্যন্ত মাছ শিকারীরা জড়ো হন।
মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নে খাল-বিল, জলাশয়ে বছরের এ সময় খাল-বিলের পানি কমে হাঁটু সমান,কোন কোন ক্ষেত্রে কোমর সমান হয়ে এলে ‘হাইত উৎসবে’র আয়োজন করেন এলাকার মানুষজন। দিনক্ষণ ঠিক করে এলাকায় মাইকিং করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাইত উৎসবে মাছ শিকারীরা পলো, ঠেলা জাল, খড়াজাল, ডুবা ফাঁদ,চাঁই সহ বিভিন্ন রকম সরঞ্জাম নিয়ে মাছ শিকার করতে বিলে নেমে পড়েছে। বিলের দুপাশে বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী পুরুষরা হাইত উৎসবের মাছ শিকার দেখছে।
বিলের আশে পাশে এ যেন এক অন্যরকম আনন্দ বিরাজ করছে। তবে এ বছর বন্যার পানিতে মাছ ভেঁসে যাওয়াতে মাছ শিকারীরা বেশি মাছ শিকার করতে পারেনি।
পাশ্ববর্তী হোসেনপুর উপজেলার বাসিন্দা তারিফ হাসান বলেন, হাইত উৎসবে মাছ শিকার করতে এসে তেমন মাছ পাইনি। তবে সবার সাথে মাছ ধরছে বিলে নেমে ভাল লাগছে।
হাইত উৎসবে মাছ শিকার করতে আসা মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের বাসিন্দা মামুন আহমেদ বলেন, আগের মত হাইত উৎসবের আনন্দ নেই। বর্তমানে কিছু কিছু অঞ্চলে গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে গ্রামের মুরব্বিরা হাইত উৎসবের আয়োজন করে। তবে মাছ শিকারীরা তেমন মাছ শিকার করতে পারিনি।
শেরপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম বলেন, অনেক বছর আগ থেকেই এখানে অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে হাইত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। প্রায় আশে পাশের ৮-১০ মাইল দূর থেকে মাছ শিকার করতে অনেকে আসছে ।