আ: কাইয়ুম
জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে অনেক কিছু খাওয়া ছেড়ে দিছি। ছাড়তে ছাড়তে এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার অবস্থা।
বাংলাদেশের বড় বড় যত ব্যবসায়ী আছে; খোজ নিলে দেখবেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে বিএনপি সরকারের সময়ে। আর তারা এখন তাদের ব্যবসা আরো রমরমা করে চলেছে বর্তমান সময়ে। এটা কিভাবে সম্ভব! সম্ভব, কারন ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট কোনো দল নাই আর তাই যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তখন তারা সে দলের কোলে উঠে যায়। ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতাবান লোককে ব্যবসায়িক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ফাঁদে ফেলে তারা। ব্যবসায়ীদের আরো সুবিধা হয় যদি সরকারের কেউ ব্যবসায়ী থাকে। তারা সে সুবিধাটাই বর্তমানে পেয়ে বসেছে। কারন বর্তমান সরকারের ৩০০ এমপির মধ্যে প্রায় অধিকাংশের পেশাই ব্যবসা। যারা নাকি ব্যবসা থেকে রাজনীতিতে ঢুকেছে। তাই তাদের মগজেও ব্যবসায়িক একটা ধান্দা বিরাজ করতেই পারে। সরকারের বাইরের ব্যবসায়ী আর ভেতরের ব্যবসায়ী যদি এক হয়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশটা হয়ে যাবে একটা পণ্য। জনগণ গোল্লায় যাক। কোন জিনিসটার দাম বাড়ে নাই, এমুন একটা পণ্য দেখাতে পারবেন কেউ। পারবেন না। আমরা বাঙ্গালীরা শুধু আলু, পেয়াজ, তেল, কাচামরিচের দাম বাড়ার কথা জানি আর মনে হয় এই কয়ডা জিনিস দিয়েই আমাদের দিন চলে; তা নাহলে এই কয়ডা জিনিসের দাম বাড়লেই চিল্লাই কেন!
যে সাবান আমি ৩৫টাকা দিয়ে কিনতাম সে সাবান কিনি এখন ৭০টাকায়, যে টুথপেষ্ট আমি ১৮০ টাকায় কিনতাম সেটা এখন কিনি ২৯০টাকায়, ডিটাজেন্ট পাউডার যা ৫০/৫৫ টাকা ছিলো তা এখন কিনতে হয় ৮০/৮৫ থেকে ৯০/৯৫ টাকায়( আধা কেজি প্যাকেট)। এমুন করে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম ৪০% থেকে ৪৫% বাড়ছে, বেড়েই চলেছে। নিয়ন্ত্রন কোথায়। নিয়ন্ত্রন নাই। একটা পানির বোতল ১৫টাকা থেকে ২০টাকা হয়ে গেলো, কেন? বাংলাদেশে পানির অভাব আছে।নাকি পানি শুকিয়ে গেছে, আমদানি করতে হচ্ছে সৌদি আরব থেকে?
গত সপ্তাহের অতিবৃষ্টির কারনে তলিয়ে গেছে অনেক ধানের জমি, মাছের ফিসারী। এই দুঃসময়ে চাউল ব্যবসায়ী ভাইয়েরা করছে কি প্রতি বস্তা চালে ২০০টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছেন। ঐটা মাথায় আসেনা কেন বাড়বে, যে ধানক্ষতেগুলো সেগুলোতে তো এখনো ধানের শীষেই আসে নাই। তাহলে বাড়লো কেন? মাছ এখন সস্তা হলেও তিনমাস পরে টের পাবে বাঙ্গালী কত মাছে কত কাটা।
এসবকিছুতেই নিয়ন্ত্রন আনা আবশ্যক। সবচেয়ে বড়কথা সরকার ব্যবসায়ী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে হবেনা বা ব্যবসায়ী দ্বারা সরকার গঠন করলেও হবেনা। সরকার যদি মাঠের রাজনীতিবিদ দ্বারা গঠিত হয় তবেই আবার সাধারন মানুষ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবে। আগুন লাগবেনা বাজারে,,
আমি শুধু একটা জিনিস অনুভব করে আশ্চর্য হই যে, “আমরা সাধারন মানুষ কতটা ধৈর্যশীল হয়ে গেছি” আবার এই ভেবে ব্যথিত হই যে, “আমরা আসলে কতটা ব্যক্তিত্বহীন আর অপদার্থ মেরুদন্ডহীন”।।