নরসিংদী প্রতিনিধি:
২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করতে বর্তমান সরকার নানা উদ্যোগ ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছে। যার প্রমাণ সাক্ষরতা হারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখলেই বুঝা যায়। ২০০৯ সালে সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন স্বাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ৫৮.৪ শতাংশ। চলতি বছর যেটি হয়েছে প্রায় ৭৬.৮ শতাংশ।
ইউএসএআইডি- এর সবাই মিলে শিখি প্রকল্পের লক্ষ্য হলো সকল শিশুর বিশেষ করে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের শিখনের সুযোগ বৃদ্ধি করা। প্রকল্পের উদ্যোগে রবিবার নরসিংদীর আহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে “আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস – ২০২৩” উদযাপিত হচ্ছে। এ বছর সাক্ষরতা দিবসে ইউনেস্কোর নির্ধারিত প্রতিপাদ্য ‘পরিবর্তনশীল ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সাক্ষরতার প্রসার’ যা সময়ের গুরুত্ব বিবেচনায় অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। কারণ, বর্তমানে এই বিশ্বায়নের যুগে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করার জন্য পড়তে, লিখতে এবং বুঝতে পারার ক্ষমতা থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। সাক্ষরতাই একমাত্র হাতিয়ার, যা আমাদের চারপাশের অনুভূতি বুঝতে এবং সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে নরসিংদীর আহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্ধ-দিবসব্যাপী প্রোগ্রামের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষিক জনাব জয়বুন্নেছা সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন ‘‘আজকের এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে তার বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবে। কারণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দিবসগুলো যে উদ্দেশ্যে পালন করা হয় তাতে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা আরও বৃদ্ধি পায়।’’
রবিবারের উক্ত অনুষ্ঠানে শিশুদের জন্য বেশকিছু মজার মজার ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল। শিশুরা বিভিন্ন রঙ নিয়ে খেলাধুলার পাশাপাশি অন্যান্য আলোচনায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃ শহীদুল ইসলাম। তিনি তার বক্তব্যের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে ভীষণ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন ‘‘ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও এরকম আয়োজনে সামিল করতে হবে।
যাতে সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।’’ ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আহ্বান জানান যে তারা যেন পড়াশুনা ঠিকভাবে করে এবং আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসে। শিক্ষার মান উন্নয়নে এবং সাক্ষরতা বৃদ্ধিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন।
পুরো আয়োজনটি সভাপতিত্ব করেন নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃ সোহরাব হোসেন ভূঞা। তিনি তার বক্তব্যে বলেন “ শিক্ষা একটি এমন হাতিয়ার যা দিয়ে যেকোনও ভালো-মন্দের মধ্যে খুব সহজেই পার্থক্য করা যায়। যার সঠিক শিক্ষা আছে সে সহজেই সমাজের উন্নতিতে সামিল হতে পারে।”
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে সেন্টার ফর ডিসঅ্যাবিলিটি ইন ডেভেলপমেন্টের (সিডিডি) থিমেটিক এক্সপার্ট জনাব জাহাঙ্গীর আলম এবং ইউএসএআইডি- এর সবাই মিলে শিখি প্রকল্পের গভর্নমেন্ট রিলেশনস এডভাইজার জনাব মাসুম আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। ভবিষ্যতে প্রকল্পের আওতায় আরও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপনসহ সবাই মিলে শিখি প্রকল্পের মূল লক্ষ্য সকল শিশুর বিশেষ করে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের শিখনের সুযোগ বৃদ্ধি করাতে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সেসবের বিস্তারিত তুলে ধরেন।