মোয়াজ্জেম হোসেন স্টাফ রিপোর্টারঃ
ডব্লিউডব্লিউএফ এর মতে এশিয়ায় বন্য হাতি কমে যাওয়ার প্রধান কারণ বাসস্থান হারানো
শেরপুরের নালিতাবাড়ী থেকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট পর্যন্ত গারো পাহাড়জুড়ে হাতির বিচরণক্ষেত্র। কিন্তু সেই বিচরণক্ষেত্রে মানুষের পা পড়েছে। হাতি হারিয়েছে বাসস্থান। ফলে হাতি–মানুষ দ্বন্দ্ব লেগেই আছে। কখনো সে দ্বন্দ্বে বলি হচ্ছে বন্য হাতি, কখনোবা প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খাদ্যসংকট আর বিচরণক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়ায় লোকালয়ে হাতির হানা বেড়েছে।
শুধু গারো পাহাড়েই নয়, শিকারিদের দৌরাত্ম্য, বাসস্থান হারানোসহ নানা কারণে বিশ্বজুড়েই স্থলভাগের সর্ববৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণী হাতির জীবন হুমকির মুখে। এরই বাস্তবতায় আজ ১২ আগস্ট পালিত হয়েছে বিশ্ব হাতি দিবস।
সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন বিশ্ব বন্য প্রাণী তহবিলের (ডব্লিউডব্লিউএফ) তথ্যমতে, এক শতাব্দী আগে বিশ্বজুড়ে হাতির সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখ। এখন মাত্র ৪ লাখ হাতি টিকে আছে। এশীয়ায় বন্য হাতি কমার অন্যতম কারণ হিসেবে বাসস্থান হারানোকে দায়ী করেছে ডব্লিউডব্লিউএফ।
গারো পাহাড়েও একই ঘটনা ঘটেছে। বন বিভাগ সূত্র বলছে, শেরপুরের নালিতাবাড়ী, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী হয়ে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বন্য হাতির বিচরণক্ষেত্র। সেখানে বেড়েছে মানুষের বিচরণ। শেরপুরে গত ২৮ বছরে হাতির আক্রমণে ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাতি মারা গেছে ৩৩টি। এর মধ্যে ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯ বছরে মারা গেছে ২৭ জন এবং হাতি মারা গেছে ২৫টি।
গারো পাহাড়, বন্য প্রাণী ও নদী রক্ষা পরিষদের উপদেষ্টা বিপ্লব দে কেটু বলেন হাতি হচ্ছে প্রকৃতির পাহারাদার। আমরা চাই হাতি ও মানুষের সহাবস্থান নিশ্চিত হউক। হাতির জন্য পাহাড়ে পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হউক।
বন বিভাগ সূত্র বলেছে ঝিনাইগাতির তাওয়াকুচি ও কর্নঝোরা গ্রামে ১০০ হেক্টর বনভূমিতে হাতির খাদ্যোপযোগী বাগান করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম আবদুল ওয়াদুদ বলেন হাতির বিচরণ এলাকায় অভয়ারণ্য সৃষ্টি করতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত অনুমতি পাব। তবে হাতিকে কোনভাবে বিরক্ত করা যাবে না।