নিজস্ব প্রতিবেদক
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদের দিনে জঙ্গি হামলার ৭ বছর পূর্ণ হলো শুক্রবার (৭ জুলাই)। এদিন জঙ্গি হামলায় আত্মোৎসর্গকারীদের মধ্যে দুই পুলিশ সদস্য জহিরুল ইসলাম ও আনছারুল হক এবং স্থানীয় গৃহবধূ ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা।
শুক্রবার (০৭ জুলাই) সকালে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা স্থলে নির্মিত অস্থায়ী বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম বার।
পরে নিহতদের স্মরণে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম বারের
সভাপতিত্বে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা এড. এম এ আফজল,সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান,পৌর মেয়র পারভেজ মিয়া,সিভিল সার্জন ডা:সাইফুল ইসলাম,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুবেল মাহমুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. মোস্তাক সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আল আমিন হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) নূরে আলম,জেলা যুবলীগের আহবায়ক আমিনুল ইসলাম বকুল,জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু,জেলা মহিলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিস বেগম,জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন, কিশোরগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ দাউদ সহ জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা ও নিহতের স্বজনরা উপস্থিত ।
২০১৬ সালে ঈদুল ফিতরের দিন (৭ জুলাই) ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরেই আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে।
এ হামলায় জহিরুল ইসলাম ও আনছারুল হক নামে দুইজন পুলিশ কনস্টেবল, স্থানীয় গৃহবধূ ঝর্ণা রাণী ভৌমিক ও আবির রহমান নামে এক জঙ্গি নিহত হন। আহত হয় আরো আট পুলিশ সদস্য। পুলিশের গুলিতে আহত আরেক জঙ্গি শফিকুল ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে চিকিৎসা শেষে কিশোরগঞ্জে আসার পথে নান্দাইলে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির অভিযোগপত্র ২০১৮ সালে আদালতে দাখিল করে। অভিযোগপত্রে মোট ২৪ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হলেও ১৯ জন আসামি দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন এবং বাকি ৫ জন আসামি কারাগারে রয়েছেন।
কারাগারে আটক পাঁচ আসামি হলেন- কিশোরগঞ্জের জাহিদুল হক তানিম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, কুষ্টিয়ার আব্দুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, গাইবান্দার জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজিব গান্ধি ও আনোয়ার হোসেন। অভিযোগপত্রে মামলার স্বাক্ষী হিসেবে ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। আসামিদের মধ্যে কেউ কেউ শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন।
দ্রুত বিচারের মাধ্যমে এ হামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন নিহতের পরিবার ও স্বজনরা।