সৈয়দ সময় , নেত্রকোনা :
গত কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী ও উব্দাখালী নদীর পানি বিপদ সীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া কলমাকান্দা উপজেলার মহাদেও, বৈঠাখালী, মঙ্গলেশ্বরী,গুমাই ও গণেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সোমবার (৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উব্দাখালী নদীর ডাকবাংলো পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টার দিকে বিপদ সীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।এছাড়া জেলার সোমেশ্বরী, কংস ও ধনু,ধনাইখালী নদীসহ অন্যান্য নদ নদীর পানি ও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কলমাকান্দা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার আসাদুজ্জামান জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টির ফলে নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আমরা সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।জরুরি হট নম্বর খোলা হয়েছে। শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও রাজিব উল আহসান বলেন, কয়েকদিনের পাহাড়ী ঢলে সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আশপাশের এলাকায় পানি বৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বাড়িঘর বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়নি। আমরা খবরাখবর রাখছি, আমরা বন্যা মোকাবেলায় শুকনো খাবার সহ প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুত রেখেছি।
এদিকে খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও রুয়েল সাংমা বলেন, পাহাড়ী ঢলে ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, আশপাশের এলাকায় পানি ডুকতে শুরু করেছে, তবে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো দৃশ্যমাণ বন্যার পরিস্থিতি হয়নি। উপজেলার নিচু অঞ্চল গুলোতে পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা বন্যা মোকাবেলায় সবধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আমাদের আশ্রয় কেন্দ্র গুলো ও প্রস্তুত রয়েছে।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও এসএম মাজহারুল ইসলাম বলেন, বারহাট্টা উপজেলায় কংশ নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় আশপাশের এলাকায় পানি ডুকতে শুরু করেছে। তবে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান বলেন, কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি সন্ধ্যা পর্যন্ত বিপদ সীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকালে ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। সারাদিনের বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে। হাওরাঞ্চলের খালিয়াজুরীতে একেবারে নীচু এলাকায় কিছু পানি গেলেও কোনো বাড়িঘরে পানি ঢুকেনি।
তিনি আরও জানান, গত দুই দিনে জেলায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যদি বৃষ্টিপাতের এ ধারা অব্যাহত থাকে তাহলে কিছু নীচু এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে টানা বৃষ্টি হলেও এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে পানি বাড়লে কোনো এলাকা প্লাবিত হলে তা মোকাবেলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
তিনি জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় সভা করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যথেষ্ট পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে।