সঞ্জিত চন্দ্র শীল
হোসেনপুর ( কিশোরগঞ্জ)সংবাদদাতা:
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে অস্থির মসলার বাজারে যেন আগুন লেগেছে।সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে জিরা,আদা ও কাঁচা মরিচ। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে জিরা বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকা কেজি। অথচ গত ঈদে এই জিরার দাম ছিল৪০০- ৪৫০ টাকা।
ক্রেতারা জানান, এবার কোরবানির ঈদে পশুর ঊর্ধ্বমুখী দামের মধ্যে মসলার বাজারের এ অস্থিরতা বেশি ভোগাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষদের। বর্তমান সব নিত্যপণ্যের দাম মধ্যবিত্তদের আওতার বাইরে চলে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে না। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সুত্রমতে,গত দুই মাসের ব্যবধানে কিছু কিছু মসলার দাম দুই থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। আর এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে পাঁচগুণ। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভালো মানের জিরা ও আদার দাম। এছাড়া রসুন, হলুদ, মরিচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, এলাচসহ অন্যান্য মসলার দামও বতমানে চড়া রয়েছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর তথ্যমতে, ২০২২ সালের জুনে প্রতি কেজি জিরা সর্বনিম্ন ৩৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর ওই সময়ে আমদানি করা আদা মান ভেদে কেজিপ্রতি ৬০-১০০ টাকায় এবং দেশি আদা ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে আদার দাম তিন থেকে পাঁচগুণ বেড়েছে। অন্যদিকে রসুনের দামও বাড়তি। আমদানি করা রসুন পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা দরে, আর খুচরা বাজারে দাম ধরা হয়েছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজিতে। দেশি রসুনের পাইকারি দর কেজিপ্রতি ১২০ টাকা এবং খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। মানভেদে কোনো কোনো রসুন ১৮০ টাকা কেজি দামেও বিক্রি হচ্ছে।বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০- ৮০ টাকায়।
হোসেনপুর বাজারের মসলা ব্যবসায়ী গোলাপ মিয়া,বাদল মিয়াসহ অনেকেই জানান, বাজারে যে পরিমাণ মসলার চাহিদা রয়েছে, সেরকম সরবরাহ এখন নাই। এ কারণে দাম বাড়ছে। আমদানি নির্ভর হওয়াতে ডলারের দাম বাড়ার প্রভাবও কিছুটা পড়েছে। এছাড়াও প্রতি কেজি লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ টাকায়। গত মাসে লবঙ্গের দাম ছিল প্রতিকেজি ১৪০০ টাকা। আবার এক মাসের ব্যবধানে এলাচের দাম প্রতি কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি গোলমরিচ ৭০০-৭৫০ টাকায়, দারুচিনি ৪৫০ টাকা এবং ধনিয়া ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ী দীপক মোদকসহ অনেকেই জানান,এক বছরের ব্যবধানে ৩০ কেজির এক বস্তা জিরার দাম বেড়েছে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা। ভারত থেকে জিরা আসছে না। অন্যান্য মসলার ক্ষেত্রে ডলার সংকট, এলসি (আমদানি ঋণপত্র) দিতে চায় না ব্যাংক। এ কারণে দাম একটু বেশী। তারপরও খুচরা বাজারে যেভাবে দাম বেড়েছে পাইকারি বাজারে এতটা বাড়ে নাই। ফলে ঈদের আগে নিত্য পণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতা সাধারনের নাবিশ্বাস উঠেছে।