রমজান আলী জুয়েল,
বেলাব(নরসিংদী) প্রতিনিধিঃ-নরসিংদীর বেলাবতে আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে ইয়াছিন (৯) নামে এক শিশুর ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। গোসলে নেমে নিখোঁজ হওয়ার ৪০ঘন্টা পর সোমবার সকালে তার মরদেহ ভেসে উঠলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার করে।
গত শনিবার দুপুর ১ঃ৩০ টায় বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পেছনে আড়িয়াল খাঁ নদে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে নেমে ইয়াছিন ডুবে যায়। দুইদিন ডুবুরি দল নদে খোঁজাখোঁজি করেও তার কোন সন্ধান পাইনি ।
নিহত ইয়াছিন কিশোরগঞ্জ জেলার বত্রিশ গ্রামের রাসেল মিয়ার ছেলে। সে বেলাব উপজেলার মাটিয়ালপাড়া গ্রামে তার নানা রইছ উদ্দিনের বাড়িতে থাকতো।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার দুপুর ১ঃ৩০ দিকে শিশু ইয়াছিন তার বন্ধুদের সাথে আড়িয়াল খাঁ নদে গোসল করতে যায়। এসময় নদে থাকা ভাঙা ডিঙি নৌকায় করে নদের মাঝ বরাবর গিয়ে গোসলের জন্য ঝাঁপ দেয়। এর কিছুক্ষণ পরই ইয়াছিন পানিতে তলিয়ে যায়। পরে সাথে থাকা বন্ধুরা স্থানীয়দের জানালে তারা নদে তল্লাশি শুরু করে। পরে বেলাব ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলে স্টেশন অফিসার ইয়াছিন ইকবালের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক ভাবে নদে তল্লাশি করে। এসময় শিশুটির খোঁজ না পেয়ে গাজীপুর জেলার টঙ্গীর ডুবুরি দলকে খবর দেয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৪ টায় ৪ সদস্যের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে নদে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। তারা নদের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখোঁজি করে শিশুটির সন্ধান না পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় অভিযান বন্ধ করে। পরবর্তীতে রবিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ডুবুরি দল দ্বিতীয় দিনের মত অভিযান শুরু করে। ঐদিন সারাদিন নদের বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান করেও শিশুটির সন্ধান পাই নি। পরে তারা রাত সাড়ে আটটার দিকে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করে।
সোমবার সকাল ৬ টা ২০ মিনিটে মাঝিরা নদে একটি শিশুর মরদেহ ভাসতে দেখে। পরে তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে সাড়ে ৬ টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ২৫০- ৩০০ হাত দূরে নদ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুটির মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে এলাকার মানুষরা নদের ঘাটে ভীড় জমায়। এসময় স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
বেলাব ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ইয়াছিন ইকবাল বলেন, নদে গভীরতা বেশি ও তীব্র স্রোত থাকার কারণে আমাদের উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হয়েছে। আমরা ডুবুরি দলের পাশাপাশি নৌকা দিয়েও সন্ধান চালিয়েছি। কিন্তু কোন ভাবেই সন্ধান পাওয়া যায়নি। দুইদিন পার হয়ে গেলে মরদেহ ভেসে উঠার সম্ভাবনা থাকে এজন্য রাতে অভিযান সমাপ্ত করা হয়। পরে সকালে মরদেহ ভেসে উঠার খবর পেয়ে হাটুঁসমান পানি থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে মরদেহ হস্তান্তর করেছি। তারা প্রশাসনের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।