মাসুদ মিয়া ঃ ‘কেনাফ রাজ্য’
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে উচ্চফলনশীল তোষা পাট ও কেনাফের বীজ উৎপাদন প্রযুক্তি জনপ্রিয়করণ ও সম্প্রসারণ এর লক্ষ্যে ০৭/০১/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থেত ছিলেন বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সৃযোগ্য মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল আউয়াল মহোদয়। পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্র, কিশোরগঞ্জ এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও বিজেআরআই কিশোরগঞ্জ এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাবৃন্দসহ অন্যান্য কর্মকর্তা। আর যাদের নিয়ে আমাদের মূল আয়োজন মাইজপাড়া, কিরাটন এলাকার কেনাফ বীজ উৎপাদনের সাথে জড়িত কৃষক ও কৃষাণীরা। মাননীয় মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল আউয়াল মহোদয় ইতিপূ্র্বে অত্র এলাকার কেনাফ চাষীদের মধ্যে বিজেআরআই উদ্ভাবিত কেনাফের উচ্চফলনশীল জাত এইচসি-৯৫ জাতের কেনাফ বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করেন। যাতে কৃষক কৃষাণী নিজেদের বীজ নিজেরা উৎপাদন করে উন্নত জাতের কেনাফ বীজ দিয়ে আঁশ মৌসুমে আবাদ করে অধিক পরিমাণ আঁশ উৎপাদন করে অধিক পরিমাণে লাভবান হতে পারেন। সোনালী আঁশের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিজেআরআই এর সম্মানিত মহাপরিচালক মহোদয় গত বছর ০১ অক্টোবর, ২০২২ বাংলাদেশে প্রথম কেনাফ বীজ উৎপাদন সমিতির শুভ উদ্বোধন করেন। উক্ত সমিতির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ২৩৪ জন এবং পর্যায়ক্রমে সদস্য সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে আরো উল্লেখ্য যে, উক্ত সমিতির আওতায় প্রায় ২০ একর জমিতে কেনাফ বীজ উৎপাদন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ আশরাফুল আলম কাজল অবহিত করেন। কিশোরগঞ্জ জেলায় প্রায় ১২০ থেকে ১৩০ মেট্রিক টন কেনাফ বীজের প্রয়োজন হয়। যার সিংহ ভাগই বাজারের নিম্নমানের কেনাফ বীজ ব্যবহার করে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন কেনাফ চাষীরা। বিজেআরআই এর সুযোগ্য মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল আউয়াল মহোদয় দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপরই কেনাফ বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে বার বার কিশোরগঞ্জে কেনাফ চাষীদের দ্বোরগোড়ায় এসে উচ্চফলনশীল কেনাফ বীজ উৎপাদনের বিভিন্ন সময়ে মত বিনিময় সভা করাসহ চাষী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে উপস্থিত থেকে কৃষকদের কেনাফ বীজ উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করেন। মাননীয় মহাপরিচালক মহোদয়ের গতিশীল নেতৃত্বের এবং দিক নির্দেশনা প্রদানের কারণেই কিশোরগঞ্জ জেলায় এ বছর ৩০-৪০ মেট্রিক টন কেনাফ বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে যে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই কিশোরগঞ্জ জেলায় বিজেআরআই উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল কেনাফ বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে। কিশোরগঞ্জ জেলায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে পাট ও পাট জাতীয় ফসলের আবাদ করা হয়। যার মধ্যে ৯ হাজার হেক্টর জমিতেই কেনাফের আবাদ করা হয়।