সঞ্জিত চন্দ্র শীল
হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার ১৭নং পশ্চিম গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালা খুলে শিক্ষকরা প্রবেশের চেষ্টা করলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বাঁধা সৃষ্টি করে। সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্বে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
অভিযোগে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আজিজুল হক ও সহকারি শিক্ষকবৃন্দ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তালা খুলে প্রবেশের চেষ্টা করলে স্থানীয় প্রভাবশালী ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: জামাল উদ্দিন ও তার সহযোগিরা তাদেরকে বাঁধা দেয়।
এসময় শিক্ষকদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করে। পরে নিরুপায় হয়ে শিক্ষকবৃন্দ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের স্মরনাপন্ন হন।
এ ব্যাপারে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া পারভেজ এর নিকট প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষকবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণী কক্ষ তালাবদ্ধ এবং শিক্ষার্থী শূন্য। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির মধ্যে কয়েকদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জের ধরে বিদ্যালয়ে চরম বিশৃংখলা দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়টি ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণে প্রতিষ্ঠানটির অগ্রগতি হচ্ছেনা।
বিদ্যালয় মাঠে প্রায়ই গো চারণ ও ওয়াশ রুম সিমগাছ দিয়ে বেষ্ঠিত করে রেখেছে সভাপতির লোকজন।
অব্যবস্থাপনা ও নোংরা পরিবেশের কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারচ্ছেনা।
অপর দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির মধ্যে দ্বন্দ্ব অব্যাহত থাকলে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা অচিরেই ভেঙ্গে পড়বে বলে স্থানীয়দের অভিমত।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন, আমি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তালা খুলতে বাঁধা দেইনি। তবে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বিদ্যালয়ের পুরাতন বই ও কাগজপত্র বিক্রি নিয়ে তার সাথে কয়েকদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আজিজুল হক জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশক্রমে পুরাতন বই ও কাগজপত্র অফিসে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া পারভেজ বলেন, স্কুল চালু রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে এবং শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। তাছাড়া এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কমিটির পরামর্শক্রমে দ্রুতই আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।