খায়রুল ইসলাম ঃ কিশোরগঞ্জ জেলা সদর উকিলপাড়া এলাকায় গত ২১ সেপ্টেম্বর চাচাতো ভাইয়ের হাতে ভাই খুন। এ ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান আসামিকে গত মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।
এবং গত (২৮ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম বার -জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের উকিলপাড়ায় অনার্স পড়ুয়া রাহাতকে নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করে তারই আপন চাচাতো ভাই জুবায়ের। জুবায়ের এর বাবা ( শহিদুল হক) সব সময় রাহাত এর বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা নেন। তা জুবায়ের এর ভাল লাগে না। জুবায়ের চায় কিশোরগঞ্জ শহরে বাড়ি করতে। জুবায়ের এর বাবা- মা, রাহাত এর বাবার কাছে যায় শহরে বাড়ি করার পরামর্শের জন্য। তখন রাহাত এর বাবা বাড়ি করতে না করে। এ থেকে জুবায়ের এর মনে ক্ষোভ জন্ম নেয়। পরে ঘটনার দিন প্রথমে রাহাতকে ছুরিকাঘাত করা হয় পরে জবাই করে হত্যা নিশ্চিত করে জুবায়ের পালিয়ে যায়। প্রথমে সে ঢাকা তারপর নোয়াখালি পরে খুলনা পরে নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি যায়। সেখান থেকে জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
এ দিকে রাহাতকে হত্যা একটি পরিকল্পিত হত্যা বলেও অভিযোগ উঠেছে। নিহত রাহাতদের গ্রামের বাড়ি ও আত্মীয়দের মধ্যে। চাপাক্ষোভ ও সত্য ঘটনা নিয়ে চলছে নিয়মিত চুলচেড়া বিশ্লেষণ বিভিন্ন সুএ ও সরজমিনে ঘুরে জানাযায়, হত্যাকারী জুবায়ের হাসান তার বাবাকে জমিজমা নিজ নামে লিখে দেয়ার চাপ সৃষ্টি করতো নিয়মিত ফলে তাদের ঘরে অশান্তি লেগে থাকায় জুবায়ের হাসানের বাবা নিজ রুমে দরজার সিটকারী লাগিয়ে রাএি যাপন করতেন বলেও জানা গেছে । এ-র সাথে অতোপতো ভাবে জুবায়ের এ-র মা মাহমুদার যোগসাজেশ রয়েছে বলেও জানান অনেকেই এ কারণে জুবায়েরকে জেলে পাঠানো বা পুলিশের কাছে মামলা করার পরামর্শও করে জুবায়ের এ-র বাবা । ফলে বেপরোয়া জুবায়ের বেশ কয়েক মাস ধরে তার নিকট আত্মীয়দের মাঝে তার চাচা আনোয়ার হক ও চাচাতো ভাই নিহত রাহাত ও তার ভাই রিফাত কখন কোথায় যায় কি করে তার খোঁজ খবর রাখতেন নিয়মিত। এমনকি নিহত রাহাতদের বাসায় রাতের বেলা নিয়মিত যাতায়াত করে সকলকেই নজরধারি করে রাখতো সে প্রায় সময়েই রাতের ১২ টা ১ টার সময়ের নিজ বাসায় ফিরতে চাইতো না হত্যাকারী জুবায়ের এমন ধরনের নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। জুবায়ের তার ফেইসবুক আইডি থেকে তাদের পারিবারিক ফেইসবুকে মেসেনজারে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য লিখে পাঠাতেন যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণও করে। এমনকি রাতের বেলা নিহত রাহাত এ-র বাসায় ধারন করা ছবিও আপলোড করতো। জোবায়ের তার মেসেনজারে ও পারিবারিক গ্রুপে গত ৭ সেপ্টেম্বর লিখেছেন “বিবেক যেখানে স্বার্থপর নীতিকথা সেখানে হাস্যকর,,,!!” এবং
১৯ সেপ্টেম্বরে লিখে ” বিচ্ছেদের যন্ত্রণার চেয়ে বিশ্বাস ভঙ্গের যন্ত্রণা মানুষকে বেশি কষ্ট দেয়” টাকা মানুষকে প্রকৃত সুখ দিতে পারে না। এমন অনেক মেসেজ পাওয়া গেছে। জুবায়ের তার মোবাইলে ব্যবহ্ত ফেইসবুক আইডি “মোঃ জোবায়ের হাসান ” নামক ফেইসবুকে তার চাচাতো ভাই নিহত রাহাত এ-র ভাইয়ের ফেইসবুক আইডি – mahmul hasan rafi- তে বিভিন্ন সময় সে কোথায় কি করছে কিশোরগঞ্জ কবে আসবে এমন খোঁজ খবরও রাখতো জোবায়ের এমনকি গত ১ সেপ্টেম্বর ও ৭ সেপ্টেম্বর মেসেনজারে যোগাযোগ করে জানতে চায় সে কোথায় আছে।
তাছাড়াও আত্মীয়দের মধ্যে লুকিয়ে থাকা কথা মতে রাহাতকে হত্যার পৃর্বে জোবায়ের তার আরেক চাচা মাহবুবের বাসায় নান্দাইলে রাএি যাপনের সময় রাতে না ঘুমালে এবং তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অসংগতি বিরাজমান থাকায় মাহবুবের ছেলে ইরফান ভয়ে সারারাত না ঘুমিয়ে গল্প ও আড্ডার চলে সময় পার করেছেন বলে জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।
হত্যার ঘটনার ১ সপ্তাহে পৃর্বে জোবায়ের তার আরেক চাচা রেজাউল হকের কাছে তার বাবার ফার্মে চাকরি করার জন্য সুপারিশ করেন এতেও জোবায়ের এ-র বাবা রাজি না হওয়ায় রাজগাতী আউটপাড়া পিতা- পুএের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ-র পর থেকেই জোবায়ের রাহাতকে ও আনোয়ার হককে দিনে -রাতে নজরে রাখে। তার মাঝেই জোবায়ের এ-র বোন আরিফা গত ১৪ সেপ্টেম্বরে উকিল পাড়ায় বাসা ভাড়ায় নেন এবং আরিফার ছেলেকে পড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করে রাহাতকে জুবায়ের এ-র পরিবারের লোকজন । রাহাত এ-র ইচ্ছে না থাকলেও চাচা শহিদুল হক ও চাচী মাহমুদার চাপে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করে গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে জুবায়ের গত ১৮ ও ১৯ তারিখ বোনের বাসায় গিয়ে রাহাতকে খোঁজে না পেয়ে সে কোন সময়ে আসে তা নিশ্চিত হয়ে সুপরিকল্পিত ভাবে গত ২১ সেপ্টেম্বরে নৃশংস এ হত্যার ঘটনা ঘটায়।