নীলফামারীতে জ্বীনের বাদশা আফজাল করিম(৫২)কে গ্রেফতার করেছে নীলফামারী থানা পুলিশ প্রতারনার স্বীকার হয়ে গোয়ালের গরুসহ আবাদী জমি বিক্রি করে প্রতারকের হাতে তুলে দেন ৮ লক্ষ টাকা।
অবশেষে গ্রেফতার হলেন জ্বীনের বাদশা সেই সাধে উদ্ধার হলো কথিত জ্বীনের সাথে চুক্তি করার কাজে ব্যবহৃত নন-জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্প।কথিত জ্বীনের বাদশা আফজাল করিম সদর উপজেলা টুপামারী ইউনিয়নের কিছামত দোগাছি গ্রামের মৃত জন মামুদের ছেলে।আশরাফ আলী(৪৮)থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।জানা যায়,গত ০৫/৯/২০২১তারিখ বিকালে আসামী আফজাল করিম(৫২)হঠাৎ তার বাড়ীতে উপস্থিত হইয়া কিছু সাহায্য চায়।তখন আসামীকে ০১কেজি চাল প্রদান করেন।তখন উক্ত আসামী বাদীর নিকট ০১টি কুরআন শরীফের টাকা চায়।টাকা না থাকার কারণে আসামীকে আবারো নগদ ১৫০/-টাকা প্রদান করেন।কিছুক্ষণ পর উক্ত আসামী ভুক্তভোগীকে আবার বলেন যে,তোমার ঘরে খারাপ জ্বীন বাসা বেঁধেছে।খারাপ জ্বীন প্রাথমে তোমার স্ত্রী সন্তানদের ক্ষতি করবে,পরে সব শেষে তোমার ক্ষতি করবে।এই বলে মোবাইল নম্বর নিয়ে চলে যায়।পরবর্তীতে এক দিন পর রাত ১২টায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন হইতে ভুক্তভোগীর নম্বরে ফোন দিয়ে বলেন যে,তোমাদের ঘরে খারাপ জ্বীন তাড়ানোর জন্য ৩০হাজার টাকা দিতে হবে।ভুক্তভোগীর নিকট টাকা না থাকায় ০৭দিন পরে আসামীকে তাহার বিকাশ নম্বরে ১৫হাজার টাকা প্রদান করে।পরবর্তীতে আসামী পূনরায় বাদীর বসত বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে বলে,তোমরা ১০মিনিটের জন্য ঘরের বাহিরে যাও তার কথা মত বাড়ীর সকলেই ঘরের বাহিরে গেলে আসামী কৌশলে লাল কাপড় দ্বারা বাঁধা একটি পুটলী ঘরের ট্রাংকের মধ্যে রেখে ঘরের ভিতরে যাইতে বলে।২দিন পর উক্ত আসামী ফোন ক করে বলে তোমার ঘরে রক্ষিত ট্রাংকের মধ্যে ভালো জ্বীনের বাদশার দেওয়া গুপ্তধন রয়েছে।ট্রাংকে নতুন একটি তালা লাগিয়ে চাবিটা আমাকে দিয়ে দাও,কাউকে কোন কিছু বলা যাবে না।আমার অনুমতি ছাড়া উক্ত ট্রাংক খোলা যাবে না।ট্রাংক খুললে তোমাদের বড় বিপদ হবে।এর পর ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন সময়ে আসামী সু-কৌশলে বাদীর নিকট হইতে নগদ ৪লক্ষ ২০হাজার টাকা গ্রহন করে এবং বাদীর ভাতিজী রাশিদা বেগম(৩০)এর নিকট হতে একই কায়দায় বিভিন্ন সময়ে নগদ ৩লক্ষ ৫০হাজার টাকা গ্রহন করে।আসামীর বিভিন্ন ভয়ভীতি ও চাপে বাধ্য হয়ে আশরাফ এবং তাহার ভাতিজী রাশিদা বেগম নীলফামারী থানাধীন কিসামত দোগাছী গ্রামে আসামীর বসত বাড়ীতে ২৫/১১/২০২১তারিখ বিকেল এসে আসামীকে নগদ ৩০হাজার টাকা প্রদান করে এবং একই তারিখ আসামীর কথামতে জ্বীনের বাদশা মামলার বাদীকে সম্পত্তি দেয়ার অজুহাতে আমাদের পূর্বে ক্রয়কৃত ১০০/-টাকা মূল্যের ০৩টি ও ৫০ টাকা মূল্যের ০৩টি নন-জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্প যাহাতে আসামী তাহার বসতবাড়িতে একই তারিখে আছফুল বেগম ও ভাতীজি রাশিদা বেগম এর স্বাক্ষর করে নেয়।তিনি বলেন যে,জ্বীনের বাদশা তোমাদের নামে সম্পত্তি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তোমাদেরকে ষ্ট্যাম্পগুলি ফেরত দেওয়া হবে।আসামীর কথামত সকল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে আসামীর হাতে দেয়।পরবর্তীতে ০৮/০৫/২০২২ তারিখ দুপুরে আসামী ফোন করিয়া জানায় যে,জ্বীনের বাদশা তোমাদের স্বাক্ষর করা ষ্ট্যাম্পে ১০লক্ষ টাকা করিয়া লিখে রেখেছে।তিন জনে ১০লক্ষ টাকা করে সর্ব মোট ৩০লক্ষ টাকা না দিলে তোমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে হুমকি প্রদান করে।মামলার বাদীর তাথ্যের ভিত্তিতে নীলফামারী থানার মামলা নং-২৪ (০৫)২০২২দায়ের করে অভিযান পরিচালনা করা হয়।মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান,বিপিএম.পিপিএম পুলিশ সুপার নীলফামারীর নির্দেশনা মোতাবে বৃহস্পতিবার(২৬মে)পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত)মাহামুদ উন-নবী ও সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান পরিচালনার এক পর্যায়ে আসামীকে তার নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার কারা হয়।উক্ত সময় আসামীর বসতবাড়ি হইতে মামলার বাদী পক্ষের নিকট হইতে গৃহীত নন-জুডিসিয়াল ৩সেট স্ট্যাম্পসহ বিপুল পরিমান স্বাক্ষরিত নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়। আসামী এবং আলামত সংক্রান্তে আইনগত বিষয় চলমান রয়েছে।