দৈনিক তোকদার নিউজ ডট কম,এর নিজস্ব,প্রতিবেদক :-
২০১৮সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।এ মেয়াদেও পার হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন বছর।ডিজিটাল বাংলাদেশ’গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসার পর টানা সাড়ে ১৩বছরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ব্যাপক উন্নয়নকাজ করেছে।সরকারি বিভিন্ন সেবা এখন পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনে।দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে ভৌত অবকাঠামোরও।উদ্বোধনের অপেক্ষায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু।মেট্রোরেল,রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র,এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পও দৃশ্যমান।এছাড়া সরকার মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতেও বিভিন্ন উন্নয়নকাজ ও প্রকল্প গ্রহণ করেছে।সরকারের এসব উন্নয়নকাজ দেশজুড়ে প্রচারে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।প্রকল্পের আওতায় দেশের ৪৯২উপজেলায় বসানো হবে ৫৩৮টি এলইডি ডিসপ্লে।বড় এসব ডিসপ্লেতে সরকারের উন্নয়নকাজের পাশাপাশি দিন-রাত ২৪ঘণ্টা প্রচার করা হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ।এছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধ,ভাষা আন্দোলনসহ দেশের প্রকৃত ইতিহাসের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে এতে।স্থায়ী এলইডি ডিসপ্লে ছাড়াও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে প্রচারণা পৌঁছে দিতে ১০০টি ডিজিটাল ভ্রাম্যমাণ ভ্যান থাকবে।এসব ডিজিটাল ভ্যানে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সরকারের উন্নয়নকাজ প্রচার করা হবে।এ প্রকল্পে সার্বক্ষণিক ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৫৭০জন কর্মকর্তাকে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।এছাড়া এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আয়োজন করা হবে সেমিনার ও আলোচনা সভা।সরকারের উন্নয়নকাজ ও জনসচেতনতা বাড়ানোর এ প্রকল্পে খরচ হবে ১৬০কোটি ৭৮লাখ ৭৩হাজার।রাজস্ব খাতসহ সার্বিকভাবে প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ১৬৮কোটি ২৩লাখ টাকা।প্রকল্পে প্রস্তাবিত পরামর্শক ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৬২লাখ টাকা।এরই মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ এ প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগে পাঠিয়েছে।তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ বলছে,সারাদেশের সব এলইডি ডিসপ্লেতে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা থেকে কনটেন্ট প্রচার করা হবে।অর্থাৎ সারাদেশের মানুষ একই সঙ্গে একই ভিডিও দেখতে পারবেন।ডিসপ্লেতে প্রচারিত ভিডিওগুলোর ফাঁকে ফাঁকে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনও চলবে।ফলে এ প্রকল্পের পুরো খরচ বিজ্ঞাপন থেকে আয় হওয়া অর্থে মেটানো সম্ভব।যে কারণে এ প্রকল্প নানা কারণে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তর।অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,একসেস টু ইনফরমেশন(এটুআই)প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের চার হাজার ৫৫৪
ইউনিয়ন,৩২৫পৌরসভা ও ১২সিটি করপোরেশনের ৪০৭টি ওয়ার্ডে ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে।এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে প্রতি মাসে ৪৫লাখ মানুষ ৬০ধরনের সেবাগ্রহণ করতে পারছেন।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে উদযাপিত মুজিববর্ষে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের হাতে নেওয়া কার্যক্রম জনসাধারণের কাছে উপস্থাপন ও প্রচার প্রয়োজন। সরকারি বিভিন্ন নাগরিক ই-সেবা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন ও জনকল্যাণমুখী করার জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের সব কর্মকাণ্ড, তথ্য ও সেবার যথাযথ প্রচার এবং প্রসার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।এজন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে।এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মহান মুক্তিযুদ্ধ,দেশের প্রকৃত ইতিহাস,সরকারি বিভিন্ন কর্মকাণ্ড,তথ্য ও সেবার আধুনিকায়নের বিষয়টি সহজে সাধারণ মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।এতে নাগরিক সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বাড়বে,যা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে উঠবে।প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের আওতায় ৪৯২উপজেলায় এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হবে।এতে প্রচারের জন্য প্রস্তুত করা হবে একটি ডিজিটাল কনটেন্ট রিপোসিটরি সিস্টেম,যাতে সরকারি বিভিন্ন কর্মকাণ্ড,তথ্য ও সেবাসংক্রান্ত অসংখ্য কনটেন্ট থাকবে।এ কনটেন্টের উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ,নিয়ন্ত্রণ ও তদারকিতে ডিস্ট্রিবিউশন ও মনিটরিং সিস্টেম তৈরি করা হবে।কাজের সুবিধার্থে ৫৭০জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সক্ষমতা বাড়াতে দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ।জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে করা হবে বিভিন্ন প্রচার কার্যক্রম ও সেমিনার।পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের যুগ্ম প্রধান(যুগ্ম-সচিব) মো:আব্দুর রউফ বলেন,উন্নয়ন প্রচারে সারাদেশে ৫৩৮টি এলইডি ডিসপ্লে স্থাপন করা হবে।প্রকল্পটি নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা হয়েছে।এতে প্রকল্পের কিছু বিষয় সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে।তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তর সুপারিশ অনুযায়ী প্রকল্পটি পুনরায় আমাদের কাছে পাঠাবে।এরপর সেটি একনেকে উত্থাপনের জন্য আমরা সামারি(সারসংক্ষেপ)তৈরি করবো।তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের পরিচালক(পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)ড.ভেনিসা রড্রিক্স বলেন,৪৯২উপজেলায় এলইডি ডিসপ্লে স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।তবে প্রকল্পটি এখনো অনুমোদন হয়নি।ভ্রাম্যমাণ ডিজিটাল ভ্যানের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ প্রকল্পের কার্যক্রম চালাতে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এ কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন।এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে আইসিটি বিভাগকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।