লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে,অতপর প্রতিবাদ করায় হাসিনা বানু(৩৫)নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পাষন্ড স্বামী দুলুর বিরুদ্ধে।ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
গত রবিবার(১৩মার্চ)রাতে উপজেলার বড়খাতা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।এছাড়া এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান ওই গৃহবধূ।
অভিযুক্ত দুলু উপজেলার বড়খাতা এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে।আহত ওই গৃহবধূ রংপুর পীরগাছার ফকিরা পাড়ার নুর মোহাম্মদের মেয়ে।
জানা গেছে,প্রায় ১৪বছর আছে দুলুর সাথে বিয়ে হয় হাসিনা বানুর।তাদের ১২বছর বয়সের শাহিদা খাতুন নামে ৪র্থ শ্রেনী পড়ুয়া একটি মেয়েও রয়েছে।হঠাতই গত রবিবার রাতে সুমি নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে দুলু।না জানিয়ে বিয়ে করার কারন জানতে চায় হাসিনা এবং এ নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে বাক বিতন্ডা শুরু হয়।এর এক পর্যায়ে দুলু ক্ষিপ্ত হয়ে হাসিনাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে ঘরে আটকিয়ে রাখে।এমনকি রাতভর চলে নির্যাতন বলে জানান ওই গৃহবধূ।পরে সোমবার সকালে স্থানীয়দের সহযোগীতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ভর্তি হন হাসিনা।
সোমবার ১৪ মার্চ দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়,ভুক্তভোগী হাসিনা হাসপাতালের বেডে শুয়ে ব্যাথার যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে।হাসিনার মুখে,গলায় ও তার নিচের অংশে আঘাতের লালচে দাগ।আর তার পাশে বসে কাঁদছে ৪র্থ শ্রেনী পড়ুয়া মেয়ে শাহিদা।এ সময় হাসিনা বানু বলেন,তার স্বামী তাকে না জানিয়ে বিয়ে করেন।তাই তিনি মানতে পারেননি।এ জন্য তার স্বামীর কাছে জানতে চান কেন তাকে না জানিয়ে বিয়ে করেন।
ফলে তাকে মারধর করা হয়।এমনকি ঘরে আটকিয়ে রেখে রাতভর চলে নির্যাতন।শুধু তাই নয় হত্যার জন্য গলা টিপেও ধরা হয়।পরে সকালে এসে হাসপাতালে ভর্তি হন।তিনি আরও বলেন, আমারতো এখানে কেউ নাই।তাই সুস্থ্য হয়ে তারপর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দিবেন।আর এই ঘটনায় দুলুর কঠিন শাস্তির দাবি জানান তিনি।
মায়ের পাশে বসে থাকা মেয়ে শাহিদা বলেন,আমি ঘুমিয়ে ছিলাম।হঠাতই মায়ের চিৎকার শুনে উঠে দেখি মা মাটিতে পড়ে আছে।আর পাশেই বাবা আর একজন মেয়েকে নিয়ে দাড়িয়ে।আমি বেশ কয়েকবার মাকে ডাকলেও কিছু বলতে পারেনা।
পরে সকালে প্রতিবেশী এক চাচার সহযোগীতায় মাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শাহিদা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত দুলু দ্বিতীয় বিয়ে ও স্ত্রী হাসিনা বানুকে মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন,আমি বিয়ে করে বাড়িতে যাই স্ত্রীর সাথে সমঝোতা করার জন্য।কিন্ত সে আমার কোন কথা না শুনে আমাকে মারতে এগিয়ে আসে।তাই আমি তাকে রাগের মাথায় মারধর করি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডা. জুয়েল রানা বলেন,ওই গৃহবধূকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে।এখন তাকে প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)এরশাদুল আলম বলেন,গৃহবধূকে মারধরের ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।এছাড়া ওই গৃহবধূর খোঁজ খবর নিতে হাসপাতালে পুলিশ পাঠাচ্ছি।