শেরপুরে নকলায় ওয়ারিশান সনদ জালের মামলায় আনিসুর রহমান সুজা(৫০)নামে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও নাজমুল ইসলাম(৪৩)নামে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তারা দুজন স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে উভয় পক্ষের শুনানী শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম খান তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সুজা নকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নাজমুল উপজেলার ধনাকুশা গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে ও স্থানীয় ছত্রকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
মামলা সূত্রে জানা যায়,নকলা উপজেলার ধনাকুশা গ্রামের আশরাফ আলী দুই স্ত্রীর দিকের দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়েসহ সাত সন্তানের জনক ছিলেন।
আশরাফ আলী ২০০০ সালে মারা যাওয়ার পর তার সন্তানেরা বিগত ২০১৩ সালের ২৬ জুন নকলা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান সুজা সাক্ষরিত ওয়ারিশান সনদ উত্তোলন করেন।
ওই ওয়ারিশান সনদে আশরাফ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়ম বিবিসহ ৭ ছেলে-মেয়ে যথাক্রমে মো:নাজমুল ইসলাম,মো:জাহাঙ্গীর আলম,আসমা খাতুন,রোখসানা বেগম,মনোয়ারা বেগম,কামরুন্নাহার পারভীন ও শামছুন্নাহার শিল্পীর নাম সঠিকভাবে ওয়ারিশান হিসেবে দেখানো হয়।কিন্তু পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১ জুলাই ওই ইউপি চেয়ারম্যান সুজা ৯২ শতাংশ পৈত্রিক সম্পত্তির ওয়ারিশান সনদে কেবল আশরাফ আলীর প্রথম স্ত্রী মৃত নুরজাহান বেগম,১ ছেলে মো:নাজমুল আলমও ১ মেয়ে মোছা:কামরুন নাহারের নাম উল্লেখ করেন।ওই ঘটনায় আশরাফ আলীর ছোট মেয়ে শামছুন্নাহার বাদী হয়ে সি,আর আমলী আদালতে মোছা:কামরুন্নাহার ও নাজমুল ইসলামসহ ইউপি চেয়ারম্যান সুজাকে আসামি করে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন।ওই মামলায় মঙ্গলবার মোছা:কামরুন্নাহার ব্যতীত ইউপি চেয়ারম্যান সুজা ও নাজমুল ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী আলমগীর কিবরিয়া কামরুল জানান,একটি ওয়ারিশান সনদ জাল-জালিয়াতির মামলায় সুবিধাভোগী ২ ভাই-বোন ও এক ইউপি চেয়ারম্যান সরাসরি জড়িত ছিলেন।
তাদের পরস্পর যোগসাজসক্রমেই জাল ওয়ারিশান সনদ সৃষ্টি করে তা সঠিক বলে ব্যবহার করে ওই ২ ভাইবোনের নামে একখ-জমি খারিজ করা হয়েছে।
তদন্তেও সেটি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। কাজেই অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় তাদের জামিন নামঞ্জুর করে হাজতে দিয়েছেন আদালত।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন মুন্না বলেন,নাজমুল ইসলাম ও তার বোন কামরুন্নাহারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইউপি চেয়ারম্যান সুজা ওই ওয়ারিশান সনদ দিয়েছেন।
কাজেই চেয়ারম্যান ওই ঘটনায় জড়িত নন এবং তাকে অন্যায়ভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে।