সোহেল রানা রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান
নিজে থেকে কিছু করার ইচ্ছা মানুষকে নিজের বলার মতো একটি পরিচয় এনে দেয়। স্বপ্ন তো সবাই দেখে কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে পারে কয়জন ! পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই স্বপ্নবাজ। কেউ কেউ কাঙ্খিত স্বপ্নের সাফল্যর চূড়ায় পৌঁছাতে পারে কেউবা ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দেয়। ব্যর্থতা জানা সত্ত্বেও যারা চেষ্টা করে যায় তারই আজ সফল। এমনই এক তরুণ উদ্যোক্তা সাব্বির রহমান । তিনি পেশায় একজন শিক্ষার্থী ।
রাজশাহী সরকারী কলেজের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তিনি। পড়াশুনার পাশাপাশি এই তরুণ একজন উদ্যোক্তাও। দেশিও খাঁটি পণ্যের অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান “Sabbir e Mart”এর কর্ণধার সাব্বির রহমান।
স্থানীয়ভাবে জানাযায়, সাব্বিরের জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জ এলাকায়। বয়স মাত্র ২২ বছর। বর্তমানে তিনি পড়াশোনা পাশাপাশি সফল একজন উদ্যোক্তা । কাজ করছে দেশের সব খাঁটিও পণ্য নিয়ে।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা কালীন সময়ে দেশের সকল স্কুল কলেজ যখন বন্ধ তখনই হঠাৎ করেই অল্প কিছু টাকা নিয়ে ২০২১ সালে যাত্র শুরু করে অনলাইনের মাধ্যমে দেশের সব খাঁটিও পণ্যের ব্যবসা। যাতে অবসর সময় কাটাবার পাশাপাশি হাত খরচের কিছু ব্যবস্থা হয় ভেবে। একদম প্রথমেই তার পণ্য অনলাইনে নেটিজেনদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
বর্তমানে প্রকৃতিক চাকের মধু, গাওয় ঘি, খাঁটি সারিষার তেল, যবের ছাতু, রাজশাহীর সুস্বাদু আম, খেজুরের গুড়/আখের গুড় ইত্যাদি দেশীয় খাঁটি পণ্য নিয়ে কাজ করছেন সাব্বির রহমান ।
সাব্বির রহমান তার উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়ে এই প্রতিবেদককে জানান, আমি একজন ছাত্র। পড়াশোনা করি রাজশাহী সরকারী কলেজের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষে। প্রতিনিয়ত ভাবতাম পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু একটা করতে হবে। যা থেকে ভবিষ্যৎ জীবনে চাকরি বাকরি না হলেও পরিবার নিয়ে চলাফেরা করা যায়। ২০২১ সালে করোনা কালিন সময়, কলেজ হয়ে যায় বন্ধ। তখন বাসায় বসে বেকার সময় কাটাতাম আর ভাবতাম । হঠাৎ মাথায় এলো আমি তো গ্রামের ছেলে দেশীয় খাঁটি পণ্য নিয়ে কাজ করলে কেমন হয়? চেষ্টা করে দেখি। শুরু করলাম দেশিও খাঁটি পণ্যের অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান “Sabbir e Mart”। আল্লাহর রহমতে আমার ব্যবসার অবস্থা ভালো।
সাব্বির বলেন, অনলাইন থেকে পণ্য ক্রয় করে অধিকাংশ গ্রাহকই প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এতেকরে ক্রেতাদের অনলাইনে ক্রয়ের আগ্রহ কমতে শুরু করেছে। তবে আমি আমার ক্রেতাদের বিশ্বাস ও আস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। কারণ তারা আমার কাছে কোনো রকম অগ্রিম টাকা না দিয়ে পণ্য অর্ডার করতে পারে , এবং ডেলিভারি ম্যান থাকা অবস্থায় দেখে শুনে প্রয়োজনে খেয়ে টেস্ট করে মূল্য পরিষদ করার সুযোগ আমি দিচ্ছি তাদের জন্য।
পরিবার থেকে কেমন সহযোগিতা মিলেছে? প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সাব্বির বলেন, ‘শুরুর দিকে পরিবার থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। বাধাও দেয়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংকট এসেছে। কিন্তু কখনো মনে হয়নি আমি থেমে যাব।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে এই তরুণ বলেন, ‘চাকরির পাশাপাশি নিজের উদ্যোগ নিয়ে বড় পরিসরে কাজ করার ইচ্ছা আছে। সমাজের বেকার যুবকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের যেন সৃষ্টি করতে পারি সেটিই আমার প্রত্যাশা।