ওয়াসিম কামাল
এ অবস্থায় স্থায়ী অস্থায়ী সকল বাসিন্দাদের ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির জাতীয় ঐক্য সরকার। সোমবার (১২ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টি
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে সোমবার রাতে সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর স্বীকৃত জাতীয় ঐক্য সরকারের (জিএনইউ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, “নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সবাই যেন ঘরেই থাকেন এবং বাইরে না যান।”
সংঘর্ষ শুরু হয় ত্রিপোলির সালাহ আল-দিন এবং আবু সালিম এলাকায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও সরকারি সূত্রে জানা গেছে, শহরের বিভিন্ন জায়গায় গুলির শব্দ শোনা গেছে।
সংবাদমাধ্যম লিবিয়া আল আহরার টিভি জানিয়েছে, “স্ট্যাবিলিটি সাপোর্ট অ্যাপারাটাস” নামে পরিচিত একটি আধাসামরিক বাহিনীর প্রধান আবদুল গনি আল-কিকলি নিহত হয়েছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে—এ ঘটনায় উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
এই সংঘর্ষে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ৪৪৪তম ব্রিগেড অংশ নিয়েছে বলেও বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এদিকে নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগে মিতিগা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করে। তবে কিছুক্ষণ পর বিমানবন্দরের পরিচালক ইব্রাহিম ফারকাশ জানান, বিমান চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়েছে এবং আকাশপথ বর্তমানে নিরাপদ।
এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে মঙ্গলবার (১৩ মে) স্কুলে পাঠদান ও পরীক্ষা স্থগিত রাখা যাবে, যাতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। অন্যদিকে হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়—যাতে যেকোনও জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেওয়া যায়।
এদিকে জাতিসংঘের লিবিয়া সহায়তা মিশন (আনসমিল) জানিয়েছে, তারা ত্রিপোলিতে সামরিক গতিবিধি ও উত্তেজনার পরিস্থিতি সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এক বিবৃতিতে তারা সব পক্ষকে “অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমনের” আহ্বান জানিয়েছে এবং বলেছে, “প্ররোচনামূলক কাজ এড়িয়ে সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ মেটাতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের লিবিয়া দূতাবাসও জাতিসংঘের আহ্বানে সায় দিয়েছে এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে “ত্রিপোলিতে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে শান্তি রক্ষার আহ্বান” জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে সাবেক শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর থেকে লিবিয়া ক্রমাগত রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতার মধ্যে রয়েছে। উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়া, রাজনৈতিক দল ও সামরিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ক্ষমতার লড়াই এখনও থামেনি, যার সর্বশেষ উদাহরণ এই ত্রিপোলির সংঘর্ষ।