মোহাম্মদ মাসুদ
আজ কোটা আন্দোলনকারীর বিক্ষোভ করেছেন সারাদেশে। যা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়া, গণমাধ্যম, অনলাইনসহ সারা দেশজুড়ে। চলাফেরায় নিরাপত্তাহীনতায় ভয় আতংকে সাধারণ মানুষ। আন্দোলনকারীরা হামলা মামলার গ্রেফতার শিকার হন। অনেক ছাত্র মৃত্যুতে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে দাবি করেন আন্দোলনকারী ছাত্ররা।
আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) জুমা নামাজের শেষে চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি নগরের আন্দরকিল্লা মোড় থেকে কোতোয়ালি হয়ে নিউ মার্কেটের দিকে যাত্রা শুরু করে। এছাড়াও নগরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল বের হতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও সমবেত হয়ে স্লোগান দেয় আন্দোলনকারী ছাত্ররা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত, পঙ্গু ও গ্রেপ্তার হওয়া সবার স্মরণে এবং ‘গণহত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
ছাত্র জনতা সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে গণবিক্ষোভে পরিণত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে গণবিক্ষোভকারী মোড়ে মোড়ে আন্দোলন নানা আপত্তি প্রতিবাদ জানিয়েছেন। চট্টগ্রামে ন্যায়বিচারসহ সরকারবিরোধী নানা স্লোগানে
গণবিক্ষোভ। বন্দরনগরীতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে একাদিক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে। আন্দোলনে একত্রিত হয় প্রায় কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা। চট্টগ্রামেও বৃষ্টিতে গণমিছিল বের হয়। বৃষ্টিতেও ছাত্র জনতার স্লোগানে উত্তাল। প্রশাসনের বাধা বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো ছাত্র-জনতার মিছিল।
সারজমিনে দেখা যায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। বেলা আড়াইটায় নগরের নিউমার্কেট মোড়ে ও নগরের একাধিক মোড়ে বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দরকিল্লা থেকে মিছিল বের হওয়ার পর শুরু হয় বৃষ্টি। এরপরও মিছিল নগরের নিউমার্কেট এলাকায় যায়। বৃষ্টি কিছুটা থামার পর নগরের ব্যস্ততম নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থান নেন হাজারো শিক্ষার্থী। এ সময় তাঁরা ন্যায়বিচারসহ সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দেন। এরপর মিছিলটি বেলা সাড়ে তিনটায় আন্দোলকারীরা টাইগারপাস মোড়ে অবরোধ করেন।
সড়কে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। আন্দোলনে অংশ নেওয়াদের মধ্যে এক নারী তাঁর সন্তানকে নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। আজ দুপুরে জুমার নামাজের পর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ এলাকায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী-জনতা জড়ো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আন্দরকিল্লা এলাকায় জুমার নামাজ শুরুর আগেই নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে লোকজন জড়ো হতে থাকে। দুপুর দেড়টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে আন্দরকিল্লা মোড়ে আন্দোলনকারীরা জড়ো হয়। তখন রাস্তার অপর পাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা লালদীঘি ও রাইফেল ক্লাব হয়ে মিছিল করে নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থান নেয়। সেসময় নিউমার্কেটের আশপাশের রাস্তায় যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
সেখান থেকে মিছিল করে তারা নিউমার্কেট এলাকায় এসে অবস্থান নেয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে মিছিলটি টাইগার পাস মোড় হয়ে ওয়াসার মোড়ের দিকে যায়। উত্তেজিত ছাত্র-জনতা ওয়াসার মোড়ের একটি পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। তবে সেখানে কোনো পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। মিছিলটি পরে মুরাদপুর হয়ে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বহদ্দারহাটের দিকে যাত্রা করে।
চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিলের ডাক দেন। তিনি তাদের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, আইনজীবী, ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিককর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, আলেমওলামা, শ্রমিক, অভিভাবকসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নাগরিকদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে হাজারো মানুষ অংশ নেন। এর আগে তিনি গত বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেশের সাধারণ সকলকে তাদের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার কোতোয়ালি অঞ্চল অতনু চক্রবর্তী গণমাধ্যমে বলেন, পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ঘটনাস্থলে দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা তাঁদের কর্মসূচি পালন করছেন।