আতাউল গণি, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শুরু হয়েছে কিশোরগঞ্জের হাওয়ার জনপদ উপজেলা অষ্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ‘চৌদ্দমাদল’ মেলা। ১৯ জানুয়ারি থেকে উপজেলার বাঙ্গালপাড়া হাইস্কুল এন্ড কলেজ মাঠে বসেছে প্রাণের এ মেলা। সময়ের গতানুগতিক ধারায় শতাব্দীকাল ধরে চলে আসা এ মেলাকে ঘিরে হাওরের গ্রামীণ জনজীবনে নেমে আসে প্রাণ চাঞ্চল্য। গ্রামীণ এ মেলা সামাজিক উৎসবে রূপলাভ করে। এ উৎসবের জন্য সারা বছরই মানুষ উৎসুক থাকে এবং অধীর আগ্রহে প্রহর গুনতে থাকে। আবাল বৃদ্ধ বনিতা সব বয়সের,সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মনে জাগ্রত হয় মেলার এক দারুণ ইমেজ। সকল পার্বণকে যেন হার মানায় আবহমানকাল ধরে চলে আসা এ চৌদ্দমাদল মেলা। হাওর জনপদ অষ্টগ্রামের নিজস্ব ঐতিহ্য প্রস্ফুটিত হয় এ মেলাকে কেন্দ্র করে। জাতি,ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সকল ভেদাভেদ ভুলে পারস্পরিক প্রীতি বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে ওঠে হাওয়ারবাসির মাঝে। এলাকার সাজ সাজ রব পড়ে। উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে সর্বত্র। দূরদূরান্ত থেকে ঘরে ঘরে আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে আসে। এ যেন এক মহামিলন, মহা উৎসবের ধুম পড়ে যায়। এবারও এর কমতি নেই।
চৌদ্দমাদল সেবাশ্রম সূত্রে জানা যায়- স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী চার সম্প্রদায়ের দানে পরিচালিত সেবাশ্রমে অন্যান্য বারের মতো এবারও তারকব্রহ্ম মহানাম কীর্তন ও লীলা কীর্তন অনুষ্ঠিত হবে।
মেলা আয়োজক কমিটি জানায়- চৌদ্দমাদলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাঙ্গালপাড়া হাইস্কুল এন্ড কলেজ মাঠে সাত দিন ব্যাপী গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে দোকানদারগণ এসে মিষ্টি, উখরা, ফল, চটপটি, খেলনা, প্রসাধনী, জুতা, কাপড়, লোহা, কাঠের ফার্নিচার, তৈজসপত্র, কৃষি যন্ত্রপাতি, গৃহস্থালির বাহারি রকম প্রায় অর্ধসহস্রাধিক দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেছে। কিশোরী কুলবধুরা দল বেঁধে মেলায় এসে সারা বছরের ব্যবহার উপযোগী চুরি, লিপিস্টিক, ফিতা, পাথরের অলংকার, খেলনা, গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে নিয়ে যায় এবং প্রতিদিন হাজারো জনতার সমাগম হয়। মেলায় বাহারি আসবাবপত্রের পসরা ছাড়াও চিত্তবিনোদনের জন্য রয়েছে নাগরদোলা, নৌকাদোলা, ইলেকট্রিক ট্রেন, পুতুল নাচসহ গ্রামীণ সংস্কৃতির বিভিন্ন আয়োজন।