বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়াতে যথাযথ মর্যাদা ও ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদ্যাপিত হয়েছে। দিবসটি উদ্যাপনের সূচনায় মান্যবর রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
অনুষ্ঠানমালার দ্বিতীয় পর্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মান্যবর রাষ্ট্রদূত মহোদয়ের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। পরবর্তীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং মাননীয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। আলোচনা সভায় দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রবাসী কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন। বক্তাগণ বিজয়ের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতীয় জীবনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর সমাপনী বক্তব্যের শুরুতে লিবিয়ায় অবস্থানরত সকল বাংলাদেশি নাগরিককে মহান বিজয় দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং দেশে অবস্থানরত তাদের পরিবার-পরিজনের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন। তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবস আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়—যা আমাদের গৌরব, আত্মপরিচয় এবং রাষ্ট্রীয় অস্তিত্বের প্রতীক। স্বাধীনতার স্বপ্নের পূর্ণ বাস্তবায়নে চব্বিশের ছাত্র–জনতার ঐতিহাসিক ও সাহসী আন্দোলন বিজয়ের চেতনাকে নতুনভাবে জাগ্রত করেছে। এই প্রেক্ষাপটে তিনি গণতান্ত্রিক উত্তরণের নবযাত্রায় দেশে ও প্রবাসে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী ভোটারগণ পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, লিবিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকগণ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করে এই ঐতিহাসিক সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন। তিনি বলেন, প্রবাসীরা দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার; তাদের শ্রম, নিষ্ঠা ও রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় ভিত্তি প্রদান করেছে। এ জন্য রাষ্ট্র তাঁদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। মান্যবর রাষ্ট্রদূত পরিশেষে বলেন, সততা, দায়িত্ববোধ, নৈতিকতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় একটি উন্নত, মানবিক ও মর্যাদাশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলাই হোক মহান বিজয় দিবসের অঙ্গীকার।
আলোচনা সভা শেষে দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মান্যবর রাষ্ট্রদূত সার্টিফিকেট ও পুরস্কার বিতরণ করেন। দূতাবাস আয়োজিত বিজয় দিবসের এসকল অনুষ্ঠানমালায় ত্রিপলীতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিগণ তাদের পরিবার-পরিজনসহ বর্ণিল সাজে উপস্থিত ছিলেন।