লেখাঃ রেহানা ফেরদৌসী
নভেম্বর মাসে আসন্ন পূর্ণিমাকে “বিভার মুন” বলা হয়।এই বাক্যাংশটি এসেছে বেশ কিছু আদিবাসী আমেরিকান এবং ইউরোপীয় রীতিনীতি এবং পৌরাণিক কাহিনী থেকে।
চাঁদের কক্ষপথ উপবৃত্তাকার। তাই পৃথিবীর চারপাশে ঘোরার পরিক্রমায় বছরের নির্দিষ্ট সময়ে চাঁদ তার খুব কাছে চলে আসে। তখনই তাকে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বড় এবং উজ্জ্বল দেখায়।
চলতি বছর পৃথিবীর আকাশে তিন বার সুপারমুন দেখার সুযোগ পাচ্ছেন পৃথিবীবাসী।৬ অক্টোবর, ৫ নভেম্বর এবং ৫ ডিসেম্বর।সুতরাং সে হিসেব অনুযায়ী ৫ নভেম্বর,বুধবার এ বছরে সেই সুযোগ পেতে চলেছে । বিভার মুন একটি সাধারণ সুপারমুন,কোনো চন্দ্রগ্রহণ নয়।
ইউরোপ এবং আমেরিকায় স্তন্যপায়ী প্রাণী বিভারদের নিয়ে নানা গল্প রয়েছে।এই প্রাণীরা বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে সাহায্য করে।বছরের এই একাদশতম মাস নভেম্বরে উত্তর-পূর্ব আমেরিকা এবং কানাডায় বিভারেরা শীতযাপনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। শীতের জন্য খাবার জমিয়ে রাখতে শুরু করে তারা।নভেম্বরের পূর্ণিমায় চাঁদের আলোয় কাজ গুছিয়ে রাখে এই প্রাণী।তাই ৫ নভেম্বরের পূর্ণিমার চাঁদের নামকরণ করা হয়েছে ‘বিভার মুন’।অতীতে এই নভেম্বরে বিভার ধরার হিড়িক পড়ে যেত আমেরিকা, ইউরোপের দেশগুলিতে, তাদের পশমের জন্য।শীতে ওই পশম দিয়ে গরমের জামা বুনতেন লোকজন।নামকরণের সময়ে সেই বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে।
৫ নভেম্বর সকাল ৮টা ১৯ মিনিটে (ইস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড টাইম) চাঁদ শিখরে উঠবে।সে সময়ে ভারতের ঘড়িতে বিকেল ৫টা ৪৯ মিনিট। ৪ এবং ৫ নভেম্বর, দুই দিনই সন্ধ্যার আকাশে চাঁদকে উজ্জ্বল এবং বড় দেখাবে। বিভার মুন বাংলাদেশের সময় আজ মঙ্গলবার, নভেম্বর ৪, ২০২৫ তারিখে দেখা যাবে।তবে এর সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতা কখন হবে তার নির্দিষ্ট সময় জানা যায়নি। সূর্যাস্তের পরে পূর্ব আকাশে তাকালে দেখা যাবে সেই দৃশ্য।ভাল ভাবে দেখতে চাইলে দূরবীন বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্রিটেনে ৫ নভেম্বর দুপুর ১টা ১৯ মিনিট (স্থানীয় সময়) থেকেই দৃশ্যমান হবে ‘বিভার মুন’।ক্যালেন্ডারের পাতায় বুধবার পূর্ণিমা হলেও এই ‘বিভার মুন’ ভাল দেখা যাবে বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর। ওই দিন সূর্যান্তের পরে পূর্ব দিগন্তের একেবারে কাছে থাকবে চাঁদ। এই অবস্থানে চাঁদকে পৃথিবী থেকে সবচেয়ে ভাল দেখা যায়।
৫ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে, চাঁদ পৃথিবী থেকে ৩৫৭,০০০ কিলোমিটারেরও কম দূরে থাকবে, যা এটিকে বছরের সবচেয়ে কাছের পূর্ণিমা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তাই এটি বৃহত্তম বিভার মুন হিসেবে গড়ে তুলবে।এটি গড়ের চেয়ে ৮% বড় এবং প্রায় ১৬% উজ্জ্বল দেখাবে। নভেম্বরের পূর্ণিমা সন্ধ্যার সময় পূর্ব দিকে ওঠে, সারা রাত ধরে আলোকিত হয় এবং ভোরের সময় পশ্চিম দিকে অস্ত যায় ।এটাই নিয়ম - এবং এটি প্রতি ২৯.৫৩ দিনে ঘটে।পূর্ণ বিভার মুন কে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বড় এবং উজ্জ্বল দেখাবে।
৫ নভেম্বরের বিভার চাঁদ প্রচুর শক্তি বয়ে আনছে ।বিভার চাঁদ, যা বৃষ রাশিতে অবস্থিত, তা ভিত্তি এবং প্রতিফলনের জন্য একটি শক্তিশালী সময়কে নির্দেশ করে। এই চন্দ্র ঘটনাটি বছরের শেষের আগে প্রস্তুতি, কৃতজ্ঞতা এবং মানসিক বোঝা মুক্ত করতে উৎসাহিত করে ।
অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর, পর পর তিন মাস এই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। অক্টোবরে এই দৃশ্যের নাম ছিল ‘হার্ভেস্ট মুন’। ডিসেম্বরে তার নাম হবে ‘কোল্ড মুন’। আনিশিনাবেগ জনগোষ্ঠীর মধ্যে, এই মাসটি বাশকাকোদিন গিজিস বা "হিমায়িত চাঁদ" নামে পরিচিত।
চাঁদের নির্মল-উজ্জ্বল আলো নিঃশব্দে আমাদের শেখায়,আঁধারের মাঝেও কিছু সৌন্দর্য্য লুকিয়ে থাকে,যা দিনের আলোয় নয়,আঁধারের গভীরেই তা স্পষ্ট হয়!
সম্পাদক ও প্রকাশক- খায়রুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক - সোহেল রানা
সম্পাদকীয় কার্যালয়- ৫২২ আইনুল্লাহ স্কুল রোড, স্বল্পমারিয়া, বএিশ, কিশোরগঞ্জ।
০১৯১২৫৫০৭২৭,০১৭২৪৫৭৪২১৭
Copyright © 2025 কালের নতুন সংবাদ. All rights reserved.