অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামে ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিস্টেন্স প্রজেক্ট (ফ্রিপ) প্রকল্পের আওতায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, অষ্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ এর আয়োজনে তিনব্যাপী “কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৫” শুরু হয়েছে।
পরিবেশবান্ধব চাষপদ্ধতি, কৃষি যন্ত্রপাতি ও স্থানীয় কৃষকদের উদ্ভাবনী চর্চা একসঙ্গে তুলে ধরতে এ মেলার আয়োজন করে উপজেলা কৃষি অফিস।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় উপজেলার হ্যালিপ্যাড মাঠে এই মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মোছা: দিলশাদ জাহান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জনাব অজিভিৎ সরকার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো: আব্দুল হালিম।
মেলায় মোট ১০ টি স্টলে প্রদর্শিত হয় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও অভিযোজিত ফল, সবজি ও চাষের প্রযুক্তি। রামবুটান, খেজুর, নারিকেল, কাঁঠাল, আঁশফল, তালসহ ১০ প্রজাতির আম এবং পুঁইশাক, কচুর লতি, লাউ, করলাসহ বিভিন্ন সবজির প্রদর্শনী ছিল অন্যতম আকর্ষণ। পাশাপাশি প্রদর্শিত হয় ভাসমান সবজি চাষ পদ্ধতি যা হাওর অঞ্চলের জন্য নিরাপদ সবজি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে পারে। এছাড়াও বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন উপকরণ যেমন ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঁঠালো ফাঁদ, ধানে পার্চিং পদ্ধতি, আদর্শ বীজতলা, কালিকাপুর মডেলে বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষ, মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষসহ আরও বিভিন্ন কৃষি প্রযুক্তি মেলায় প্রদর্শিত হয়। কৃষি প্রযুক্তি স্টলের সাজানো গোছানো আয়োজন দর্শনার্থীদের আলাদাভাবে নজর কাড়ে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা মেনে আমাদের কৃষিতে এগোতে হবে। কৃষির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বিজ্ঞানসম্মত এবং প্রযুক্তিনির্ভর চাষ পদ্ধতির ওপর। এই মেলার মাধ্যমে আমাদের কৃষকরা হাতে-কলমে নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন, যা আগামী দিনে ফলপ্রসূ হবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।”
এই মেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চাষাবাদে কৃষকদের সক্ষমতা বাড়ানো।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহ মুহাম্মদ মহীবুল্লাহ, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: আব্দুল আউয়াল ভুঁইয়া, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন অষ্টগ্রাম উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, সদস্য সচিব আলী রহমান খান, উপজেলা কৃষকদলের
সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস ফরাজী। মেলার প্রথম দিনে কৃষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ দর্শনার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।