! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।
ঈমান শব্দের আভিধানিক অর্থ স্বীকার করা, স্বীকৃতি দেওয়া, অনুগত হওয়া মতান্তরে দৃঢ় বিশ্বাস করা। এটি কুফর বা অস্বীকার করা বা অবাধ্যতার বিপরীত। ইসলাম ধর্মে ঈমানের অর্থ অত্যন্ত ব্যাপক। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না, বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদের ধন্য করেছেন।’ (সূরা হুজুরাত : ১৭)
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যদি সারা পৃথিবী পরিমাণ স্বর্ণও তার পরিবর্তে দেওয়া হয়, তবুও যারা কাফের হয়েছে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে তাদের তওবা কবুল করা হবে না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি! পক্ষান্তরে তাদের কোনো সাহায্যকারী নেই।’ (সূরা আলে ইমরান : ৯১)
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ’আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন গর্হিত কাজ দেখবে, সে যেন তা নিজ হাত দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়। যদি (তাতে) ক্ষমতা না রাখে, তাহলে নিজ জিভ দ্বারা ( উপদেশ দিয়ে পরিবর্তন করে)। যদি (তাতেও) সামর্থ্য না রাখে, তাহলে অন্তর দ্বারা (ঘৃণা করে)। আর এ হল সবচেয়ে দুর্বল ঈমান।’’ — সহীহুল বুখারী ৯৫৬, মুসলিম ৪৯, তিরমিযী ২১৭২, নাসায়ী ৫০০৮, ৫০০৯, আবূ দাউদ ১১৪০।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সব বনি আদমের অন্তরসমূহ দয়াময় রহমানের কুদরতের নিয়ন্ত্রণাধীন। তিনি যেভাবে চান তাতে পরিবর্তন আনেন।’ (মুসলিম, তিরমিজি)।
রাসুল (সা.) হাদিসে দ্বীনের ওপর অটল ও অবিচল থাকতে, প্রশান্ত আত্মার অধিকারী হতে মহান আল্লাহর কাছে তাওফিক কামনার প্রতি উদ্বদ্ধ করেছেন। কেননা মহান আল্লাহ তাআলা মানুষের অন্তরকে পরিবর্তন করে দেন। প্রশান্তি দান করেন।
মানুষ প্রশান্ত অন্তর পেতে এবং দ্বীনের ওপর অটল ও অবিচল থাকতে আল্লাহর শেখানো ভাষায় প্রার্থনা করা যায়। কেননা আল্লাহ তাআলাই কুরআনুল কারিমে মানুষের জন্য প্রার্থনার এ দোয়া তুলে ধরে বান্দার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আবার প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে একাধিক দোয়া শিখিয়েছেন।
তাহলো: রাব্বানা লা তুযিগ কুলুবানা বাদা ইজ হাদাইতানা ওয়া হাবলানা মিল্লাদুংকা রাহমাতান ইন্নাকা আংতাল ওয়াহহাব।'
অর্থ : ‘হে আমাদের রব! আপনি আমাদের যে হেদায়াত দান করেছেন, তারপর আর আমাদের অন্তরে বক্রতা সৃষ্টি করবেন না। আর একান্তভাবে আপনার পক্ষ থেকে আমাদের রহমত দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি অসীম দানশীলতার অধিকারী।' (সুরা আল ইমরান : আয়াত ৮)
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধিক পরিমাণে এ দোয়াটি পড়তেন- ‘ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুবি, ছাব্বিত কালবি আলা দ্বীনিকা।’
অর্থ: ‘হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আপনি আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের ওপর অবিচল রাখুন।’
‘আল্লাহুম্মা মুসাররিফাল কুলুবি সাররিফ কুলুবিনা আলা ত্বাআতিকা।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! হে অন্তরসমূহের নিয়ন্ত্রক! আপনি আমাদের অন্তরকে আপনার ইবাদতের ওপর অবিচল রাখুন।’ (মুসলিম)
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা যেন আমাদেরকে উপরোক্ত আলোচনা গুলোর প্রতি গুরুত্ব সহকারে আমল করার তাওফিক দান করেন আমীন।
লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।
সম্পাদক ও প্রকাশক- খায়রুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক - সোহেল রানা
সম্পাদকীয় কার্যালয়- ৫২২ আইনুল্লাহ স্কুল রোড, স্বল্পমারিয়া, বএিশ, কিশোরগঞ্জ।
০১৯১২৫৫০৭২৭,০১৭২৪৫৭৪২১৭
Copyright © 2025 কালের নতুন সংবাদ. All rights reserved.