সঞ্জিত চন্দ্র শীল
হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) :
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে গত কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহ ও প্রচন্ড গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে ক্রেতা-বিক্রেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কাছে সুস্বাদু তালের শাঁসের কদর যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি বিক্রিও হচ্ছে চড়া দামে। এতে খুশি তালের শাঁস বিক্রেতা ও ক্রেতারা। যদিও সহজলভ্য ও মুখরোচক হওয়ায় গরমে আরাম পেতে মানুষের পছন্দের তালিকায় থাকে ওই তালের শাঁস। সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে পৌর এলাকার শাঁস বিক্রেতা রফিক মিয়া জানান,তালের নরম কচি শাঁস খেতে সুস্বাদু হওয়ায় তীব্র তাপদাহের মধ্যে শিশু-বৃদ্ধ সবাই এ তালের শাঁস খেতে পছন্দ করেন। তাই বর্তমানে তালের শাঁসের চাহিদা দ্বিগুন বেড়ে গেছে। হোসেনপুর উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিক্রেতারা এখন দেদারসে বিক্রি করছেন ওই তালের শাঁস। আবার কোনো কোনো বিক্রেতা ভ্যানযোগে পাড়া ও মহল্লায় ঘুরে ঘুরে তালের শাঁস বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছেন।এ সময় উপজেলার নতুন বাজার মোড়ে জিনারী গ্রামের তালের শাঁস বিক্রেতা রেজা মিয়া জানান, প্রতি বছর প্রচন্ড গরমের সময়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে কচি তাল কেনেন তিনি।পরে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে সেগুলো বিক্রি করেন। আর এসব তালের শাঁস বিক্রির আয় দিয়েই তিনি সংসার চালান। তিনি আরো জানান, মূলতঃ বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত চলবে তালের শাঁস বিক্রি। তবে এবারে গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ও প্রাকৃতিক নানা কারণে ফলনও কম হওয়ায় দাম অনেক বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
পৌর এলাকার আরেক শাঁস বিক্রেতা আলামিন জানান, এক একটি তাল গাছ এক হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা প্রতি সিজন হিসেবে কিনে থাকেন। পরে সেই তাল গাছ থেকে কচি তাল সংগ্রহ করে ভ্যানযোগে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন। ভালো ফলন হলে সেইসব গাছের তাল বিক্রি করে দ্বিগুণেরও বেশি লাভ করে থাকেন। উপজেলার শাহেদলের গামের শাঁস বিক্রেতা আলি হোসেন জানান, এবার প্রচণ্ড গরম থাকায় তালের শাঁসের চাহিদা রয়েছে অনেক বেশি। প্রতিটি তালের শাঁসের বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৩০-৪০ টাকায়। প্রতিদিন গড়ে ৩০০০-৩৫০০ টাকার তাল শাঁস বিক্রি করতে পেরে তিনি মহাখুশি। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, অনেক ক্রেতা তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ৫-৭টি করে তাল শাঁস কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে ক্রেতা থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, পথচারীরা প্রচণ্ড গরমে একটু স্বস্তি পেতে ভিড় করছেন তালের শাঁস বিক্রেতাদের কাছে। এসময় ক্রেতা হোসেনপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি (অনার্স) কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, হোসেনপুর সরকারি পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক মাওলানা মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ মকসুদ ও ইসরাক লাইব্রেরীর মালিক মোঃ নবী হোসেনসহ অনেকেই জানান, এবার তালের শাঁসের দাম কিছুটা বেশি হলেও এটা মৌসুমি ফলের মধ্যে খুবই পুষ্টিকর ও ভেজালমুক্ত। তাই নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি পরিবারের সবার জন্যেও বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি সুমিষ্ট ওই তালের শাঁস।
সম্পাদক ও প্রকাশক- খায়রুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক - সোহেল রানা
সম্পাদকীয় কার্যালয়- ৫২২ আইনুল্লাহ স্কুল রোড, স্বল্পমারিয়া, বএিশ, কিশোরগঞ্জ।
০১৯১২৫৫০৭২৭,০১৭২৪৫৭৪২১৭
Copyright © 2025 কালের নতুন সংবাদ. All rights reserved.