রফিকুল ইসলাম রুবেল:
নানান দুর্নীতি, অপকর্ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে ভৈরব উপজেলার ৩নং শিমুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ভূঁইয়া রিপনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন একই পরিষদের মেম্বারগণ।
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ৭মে, পরিষদের ১০জন মেম্বারের স্বাক্ষরিত অনাস্থার লিখিত অভিযোগ কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দেয়া হয়েছে।
অনাস্থা প্রস্তাবে অভিযোগ করা হয়, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের টি.আরের বরাদ্দকৃত ‘শিমুলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে মাটি ভরাটের ভুয়া প্রকল্প সাজিয়ে ওই প্রকল্পের ১,৬১,২৭৪/- টাকা কোন প্রকার কাজ না করেই আত্নসাৎ করা হয়েছে। ওই প্রকল্পের সভাপতি করা হয় ৭নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল মতিনকে। এবিষয়ে আব্দুল মতিন অবগত নন। এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের কাবিটা “কান্দিপাড়া মেইন রোড থেকে এরশাদ আলী ভূইয়ার জমি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার প্রকল্পের নামে ১,৫৩,০০০/- টাকা কোন প্রকার কাজ না করেই সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করেন। ওই একই রাস্তায় অতি দরিদ্রে কর্মসূচীর আওতায় ১০০জন শ্রমিক দ্বারা বাস্তবায়ন করা হলেও এক বছর অতিবাহিত হতে না হতেই ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেন।
এছাড়াও ২০২২ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর কোন প্রকল্পে কত টাকা বরাদ্দ পেয়েছে তা মেম্বারদের সাথে কোন আলোচনা কিংবা মিটিং করেনি। বরাদ্দের বিষয়ে পরিষদের সদস্যগণ বিভিন্ন সময় জানার চেষ্টা করলে তিনি স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের দলীয় ক্ষমতাবলে মেম্বারদের হুমকি দিয়ে দমিয়ে রাখেন। তিনি তখন একক ক্ষমতা দেখিয়ে হুশিয়ারী দেন ” পরিষদের যেই সদস্য প্রকল্পের বরাদ্দ পাবে একমাত্র সেই জানবে প্রকল্পের কত টাকা বরাদ্দ এসেছে। তাছাড়া তিনি এমনও বলতেন তার পক্ষে মাত্র দুইজন সমস্যা থাকলেই তিনি পরিষদ চালাতে পারবেন, তাই অন্যান্য মেম্বারদের হিসেব না করলেও চলবে।
তাছাড়া তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনটি অর্থবছরের বরাদ্দের প্রায় এক তৃতীয়াংশ প্রকল্প তাহার নিজ গ্রাম ১নং ওয়ার্ডে বেনামে ভূয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন।
অনাস্থার বিষয়ে একাধিক মেম্বার জানান, মিজানুর রহমান রিপন চেয়ারময়ান নানান দুর্নীতি, অপকর্ম ও স্বেচ্ছাচারিতা করলেও এতদিন তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেনি। সে ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। সে বর্তমানে জেলে রয়েছে। পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাত ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিষদের ১০জন মেম্বার অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছে। এসব লিখিত অভিযোগ কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর তারা পাঠিয়েছেন।
পরিষদের বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান আল আমিন খোরশেদ বলেন, চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বিভিন্ন ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করেই টাকা আত্মসাত করেছে। তাছাড়া পরিষদের বিভিন্ন টাকা পয়সার কোন হিসাব দেননি। নিজ ইচ্ছে মতে খরচ করে লুটপাট করেছে। তাই সকল ১০জন মেম্বার একত্রিত হয়ে অনাস্থা দিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রশাসনের কাছে। তিনি দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন,অভিযোগ পেয়েছি
আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।