হোসেনপুর প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ব্রহ্মপুত্র ও নরসুন্দা নদের ভয়াবহ নাব্যতা সংকটে পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি আবাদে নেমে আসে স্থবিরতা। নদ দু’টির তলদেশে পানি না থাকায় সেচ নির্ভর কৃষকরা ফসল আবাদে সেচ নিয়ে মহা সংকটে পড়েন প্রতি বছর কৃষি মৌসমে । এক সময়ের উত্তাল ব্রম্মপুত্র ও নরসুন্দা নদ আজ স্মৃতীর গহিন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। যদিও গত কয়েক বছর আগে নরসুন্দা ও ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন অংশ খনন করা হলেও বর্তমানে পানি প্রবাহ না থাকায় ওই নদ দু’টি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। তাই ব্রহ্মপুত্র ও নরসুন্দা নদের দু-পাড়ের মানুষের প্রানের দাবি অতিদ্রুত নদ দু’টি যথাযথ ও টেকসই প্রক্রিয়ায় গভীরতর ভাবে খনন করে পানির প্রবাহ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হোসেনপুর-গফরগাঁও সড়কের খুরশিদ মহল সেতু সংলগ্ন এলাকায় গত বছর নদটির ওই অংশ খনন করা হলেও মূল ব্রহ্মপুত্র নদের তলদেশে পলি জমে নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে উত্তাল নদটি ছন্দ হারিয়ে আজ পানি শূন্যে পরিনত হয়েছে। ফলে ভয়াবহ নাব্যতায় হোসেনপুর, গফরগাঁও ও ময়মনসিংহ দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের অস্তিত্ব এখন প্রায় বিলীনের পথে। পানির প্রবাহ না থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তলদেশের বেশিরভাগ অংশে চলছে চাষাবাদ। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে জীব বৈচিত্রসহ মৎস্য সম্পদ ও নানা জলজ প্রাণী। হাজার হাজার জেলে পরিবার এ পেশা ছেড়ে বেকারত্ব ঘোচাতে বেছে নিয়েছে অন্য পেশা। খেয়া পারের মাঝিরা বৈঠা ছেড়ে কলের নৌকা চলিয়েও শেষাবধি ছাড়তে হয়েছে বাপ-দাদার আদি পেশা। জালের মত ছড়িয়ে থাকা শাখা নদী গুলো এখন বিত্তবানদের ফসলি জমি। বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল দখল নিতে প্রতি মওসুমেই হানাহানিতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে অহরহ। নাব্যতা সস্কটে ব্রহ্মপুত্র আজ বিপন্ন। তাই এ এলাকার মানুষের প্রানের দাবি ব্রহ্মপুত্র নদ সু-পরিকল্পিত ভাবে খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি নরসুন্দা নদের পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখা। আর তাতেই সেচ সংকট থেকে মুক্তি পাবে ওই দুই নদী পাড়ের কৃষকেরা।
ভৈরব থেকে নদ দেখতে আসা এক পর্যটক বলেন বহুদিন পর এ নদ দেখতে আসা। গত ২০ বছর আগে এসেছিলাম নানা বাড়িতে, বেড়াতে এসে কি দেখে গেলাম সে সময় আর এখন কি দেখছি, পুরো ব্রহ্মপুত্র নদ যেন দখলদার দের হাতে চলে গেলো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির আরেক নেতা জানান, ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করতে কত বার কত আবেদন যে করা হয়েছে তা আর আমার মনে নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডে লোক জন আসে আর দেখি কিছু হাইব্রিড নেতাদের নিয়ে গল্প আর আড্ডা দিয়ে চলে যান। দিন গড়িয়ে মাস বছর যায় কিন্তু নদীর আর উন্নয়ন হয় না। বালু উত্তোলন করে ব্রীজ টি কে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে দিন দিন।
পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোঃ মানছুরুল হক রবিন জানান, যতদূর জানি ব্রীজের দুই কিলোমিটার আশ পাশ থেকে বালু উত্তোলন করা যায় না। আমরা দেখছি কে বা কারা প্রতিনিহতই বালু উত্তোলন করছে। এতে ব্রীজ হুমকির মুখে পড়ছে, নদীর এক সাইড গভীর হচ্ছে অন্য সাইড উচু হচ্ছে এতে করে নাব্যতা সংকট দিন দিন বাড়ছে। আমি একজন সাধারন নাগরিক হিসাবে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই এ নদটি কে বাঁচাতে একটু এগিয়ে আসুন।
সম্পাদক ও প্রকাশক- খায়রুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক - সোহেল রানা
সম্পাদকীয় কার্যালয়- ৫২২ আইনুল্লাহ স্কুল রোড, স্বল্পমারিয়া, বএিশ, কিশোরগঞ্জ।
০১৯১২৫৫০৭২৭,০১৭২৪৫৭৪২১৭
Copyright © 2025 কালের নতুন সংবাদ. All rights reserved.