গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ব্যুরো প্রধান ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহ এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের যান্ত্রিক উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুসারে, তিনি নানা কৌশলে ময়মনসিংহে অবস্থান করে আসছেন এবং তার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
এলজিইডির বিভিন্ন গাড়ি নষ্ট না হওয়া সত্ত্বেও, মোশারফ হোসেন ভুয়া বিল ও ভাউচার তৈরি করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি নিজ নামে এবং বেনামে সম্পদ অর্জন করেছেন, যার মধ্যে ব্যাংক ব্যালান্সের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং অন্যান্য মূল্যবান সম্পত্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারী জানান, মোশারফ হোসেন প্রায় ৩০ বছর ধরে ময়মনসিংহে কর্মরত রয়েছেন, যদিও তার প্রকৃত কাজের সময়কাল মাত্র এক যুগ। একাধিকবার বদলি হলেও, অল্প সময়ের মধ্যে তিনি আবার ময়মনসিংহে ফিরে আসেন, এবং তার টিকে থাকার রহস্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনি স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সহায়তায় নানা কৌশল অবলম্বন করে টিকে থাকেন। একবার সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে, তিনি বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতা এবং বড় সাংবাদিকদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে তাদের ভয় দেখান এবং আইসিটি মামলার ভয় দেখিয়ে সাংবাদিকদের নীরব রাখার চেষ্টা করেন।
দুর্নীতিতে বেপরোয়া এই কর্মকর্তা ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে ঘুষ গ্রহণ এবং এলজিইডির যান্ত্রিক প্রকৌশলীর দায়িত্ব নিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরির মাধ্যমে দুর্নীতি চালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ময়মনসিংহবাসী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকির অভাবে তিনি এভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ করতে সক্ষম হয়েছেন। ময়মনসিংহবাসী বলছেন, তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা কঠোর আন্দোলন করবেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহবাসী তার বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলেছেন এবং তার অপকর্মের বিচার চাচ্ছেন। তারা বলছেন, যতক্ষণ না তিনি তার অপকর্মের জন্য শাস্তি পাচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা নিশ্চিন্ত হবেন না। এলজিইডি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ময়মনসিংহবাসীর এই আন্দোলন জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত হতে পারে, এবং তা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে।