নিজস্ব প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে গর্ভকালীন ভাতা কার্ডের বিনিময়ে ১৫ হাজার টাকা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে দিগদাইড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে ভিজিডিএ কার্ডের ভাতাভোগীর প্রায় ৪০ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগও পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে ১৬২ জন গর্ভকালীন ভাতা কার্ড পেয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকেই কার্ড দেয়ার বিনিময়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ভিজিডিএ কার্ডের মাধ্যমে চাল পেতেন ১২০ জন ভাতাভোগী। তাদের মধ্যে প্রায় ৬০ জন ভাতাভোগীর ৪০ টন চাল আত্মসাত করেছেন বলে জানা গেছে।
দিগদাইড় ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের খোকন ভূইয়া, সিদ্দিক ভূইয়া, চুন্নু মিয়া, আমিনুল ইসলামসহ প্রায় ১০-১২ জন এলাকাবাসী জানান, এক সময় তাড়াইল উপজেলা যুবলীগের সদস্য ছিলেন আশরাফ উদ্দিন। পরে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর আর্শীবাদে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে দিগদাইড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চুন্নুর আর্শীবাদে বেপরোয়া হয়ে যান আশরাফ উদ্দিন। ২০২৩-২৪ সালে নামে-বেনামে গর্ভকালীন ভাতা কার্ডের বিনিময়ে তিনি প্রায় ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এছাড়াও নামে-বেনামে ভিজিডিএ চালের কার্ডের ৪০ টন চাল আত্মসাত করেছে। আমরা ভুক্তভোগীদের প্রাপ্য পাওনা ফেরত চাই এবং চেয়ারম্যানের সুষ্ঠু বিচারের আবেদন জানাই।
এছাড়াও জন্ম নিবন্ধন ও মৃত্যু সনদের নামে ৭০০ টাকা থেকে আদায় করেছে চেয়ারম্যান বলে জানিয়েছেন তাড়াইল বরুহা এলাকার ভুক্তভোগী হেনা আক্তার।
দিগদাইড় ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের গর্ভকালীন ভাতাভোগী আইরিন, শিরীনা, হাবিবা আক্তার, জেসমিনসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, গর্ভকালীন কার্ড পেতে টাকা লাগবে। কাউকে বলা যাবে না টাকার কথা। তবেই তোমরা ঘরে বসে কার্ড পাবে। এমন শর্তের বিনিময়েই আমরা কার্ড পেয়েছি। কার্ড প্রতি চেয়ারম্যানকে দিতে হয়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
দিগদাইড় ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ভিজিডিএ কার্ডের মাধ্যমে চালের ভাতাভোগী মালেহা আক্তার, দুলেনা, শিপু রানী সরকার, মাকসুদা, তহুরা, মনিরা, হালেমাসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, গত দুই বছরের মধ্যে কোনো চাল পাইনি। আমাদের এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে সে নিজেই চাল উত্তোলন করছে বলে জেনেছি। আমরা গরিব মানুষ চাল পাইনি। বাজারের যে অবস্থা জীবন বাঁচানোই দায়। তাঁর মাঝে আমাদের নামের চাল চেয়ারম্যান উত্তোলন করে ফেলে কিভাবে?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগী জানান, আমাদের পরিবার স্বচ্ছল। আমার স্বামী জানেনই না আমার নামে কার্ড হয়েছে। আমি নিজেও জানতাম না।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফ উদ্দিনকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুবক্কর সিদ্দিকীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সম্পাদক ও প্রকাশক- খায়রুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক - সোহেল রানা
সম্পাদকীয় কার্যালয়- ৫২২ আইনুল্লাহ স্কুল রোড, স্বল্পমারিয়া, বএিশ, কিশোরগঞ্জ।
০১৯১২৫৫০৭২৭,০১৭২৪৫৭৪২১৭
Copyright © 2025 কালের নতুন সংবাদ. All rights reserved.