মাইনুল হক মেনু, স্টাফ রিপোর্টার :
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। এ উপজেলায় ১টি পৌর সভা ও ৯টি ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠে বাতাসে দূল খাচ্ছে সরিষা ফুলের হলুদের ঢেউ। দুর থেকে দেখে মনে হয় কৃষকের জমিতে হলুদের চাদর বিছানো। সরিষার হলুদ ফুলের হাসিতে ভরেছে কৃষকের মন। এ বছর আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ থাকায় ফসলের মাঠ হলুদ আর হলুদ। সরিষার ভালো ফলনে কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের হাসি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ফসলের মাঠগুলো সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ সৌন্দর্য্য। কটিয়াদী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, চলতি বছর এ উপজেলায় ৩৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। গতবছর এ উপজেলায় ৩২০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছিল। সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ। ফুলের সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ মানুষ। এ রূপ সৌর্ন্দয্যকে কাছ থেকে দেখতে আসছে নানা বয়সী মানুষ। সৌন্দর্য্যের এই মূহুর্তের ছবি ফ্রেমে বন্দী করছে আগত দর্শনার্থীরা। আমাদের দেশের ভোজ্যতেল আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরিষা চাষে ঝুঁকছে কৃষক। এছাড়া সরিষা থেকে তেল সংগ্রহের পর তৈরি হচ্ছে খৈল।
সরকারিভাবে কটিয়াদী উপজেরা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
চলতি মৌসুমে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে গতবছরের তুলনায় অনেক বেশি জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৩৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। উপজেলায় স্থানীয় জাত ছাড়াও উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৭, বারি, বিনা সরিষা -৯ ও বিনা সরিষা-১১ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সরিষার বীজ বপন করা হয়েছে। কোন রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, আর বাজার মূল্য ভাল থাকলে সরিষা চাষিরা এবার অধিক লাভের আশা করছেন।
অনেকেই রংবেরঙ্গের সাজে সেজে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিমায় টিকটক ভিডিও তৈরী করছে দর্শনার্থীরা। অনেকেই পড়ন্ত বিকেলে স্ত্রী-সন্তান, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে এসেছেন হলুদ রঙ্গের সরিষা ফুলের সুবাস নিতে।
স্থানীয় কৃষক বিল্লাল মিয়া বলেন, আমি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সরিষার বীজ সংগ্রহ করেছি। আমন ধান কেটে সরিষার চাষ করেছি। সরিষার তেল আমার সংসারের চাহিদা পূরনের পাশাপাশি সরিষার দানা থেকে তেল নিষ্কাশনের পর যে সরিষার খৈল পাওয়া যায় তা গরুর খাদ্য এবং জৈব সার হিসেবে সবজি খেতে ব্যবহার করতে পারি। তাছাড়া সরিষার গাছের পাতা ও ফুলের পাপড়ী পচে উৎকৃষ্ট জৈব সার তৈরি হয়। শুকনা সরিষার গাছ রান্নাবান্নার কাজে জ¦ালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সরিষা চাষে খরচ কম হয়। আমার জমিতে সরিষার ফলন খুব ভালো হয়েছে।
কটিয়াদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, এ বছর সরিষার ফলন খুবই ভালো হয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে এ উপজেলায় একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নে ৩৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছে কৃষকেরা। গত বছর এই উপজেলায় সরিষার চাষ হয়েছিলো ৩২০ হেক্টর জমিতে। সরিষা চাষে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৭, বারি, বিনা সরিষা -৯ ও বিনা সরিষা-১১ জাতের সরিষা বীজ ও সার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করেছি। আমরা সবসময় চাষীদের পরামশ দিয়ে যাচ্ছি। এখন আগের চেয়ে কম সময় ও খরচে সরিষা ঘরে তুলতে পারবে কৃষক।